শাহরিয়ার রিপন।। বেশ কিছুদিন আগের কথা। আমার এক বন্ধু তাজের বিয়েতে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহের ভালুকায়। বিয়ে উপলক্ষ্যে সে বাড়ি ছিল আমার বন্ধুর আত্মীয় স্বজনে ভরপুর। সে বাড়িতে আমাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো ছিল কেবলমাত্র আমার বন্ধুই। বাড়িতে আমার সমবয়সী বা সঙ্গ দেওয়ার মতো আর কেউ ছিলনা বললেই চলে।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে আমার বন্ধুকেও অনেক কিছু করতে হয়। যার ফলে কোন কোন সময় নিজেকে খুব একাকী মনে হতে লাগল।
এমন সময়ই দেখা মিলল নীলা নামের মেয়েটির। বয়সে আমার থেকে তিন চার বছরের ছোট হবে হয়তো। গায়ের গড়ন, চঞ্চলতা সব মিলিয়ে বেশ। আমাদের মাঝে বেশ কিছুক্ষণ ধরে পরিচয় পর্ব শেষে ভালো লাগা আর মন্দ লাগার কথা শুরু হলো। আমার সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করে আমাকে অনেকটাই ক্লান্ত করে তুলল সে। আমি তাকে প্রশ্ন করার যেন ফুরসুরতই পেলামনা। এভাবেই রাত ঘনিয়ে আসল।
আমি বার বার ঘড়ির দিকে লক্ষ্য করলেও একবারের জন্যও বলতে পারিনি। কারণ হয়তো তার প্রতি আমার দুর্বলতা। কথা বলতে বলতে একসময় তার বিষয়ে অনেক কিছুই জেনে ফেললাম। আর আমাকে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি মুগ্ধ করেছিল সে তার বন্ধুবাৎসল্যতা। তার বন্ধুত্ব আমাকে আঁকড়ে ধরে। সেই বন্ধুত্ব থেকেই মাঝে মাঝে কথা হতো তার সাথে। এমনি করে এক সময় নিজের অজান্তেই আমি ভালোবেসে ফেলি তাকে। আর তখন বার বার আমার কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী সে উক্তি “ যে ভালোবাসে সে কেনর উত্তর দিতে পারে না” মনে ঘোর পাক খাচ্ছিল। একসময় আমার ভালোবাসার ডাকে নীলা’রও সাড়া মেলে। এভাবেই বেশ কিছু দিন আমাদের মাঝে সম্পর্ক চলতে থাকে। কিন্তু এরই মাঝে ইতালী প্রবাসী এক ছেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে সবকিছু এলো মেলো হয়ে যায়।
আমি অনেক চেষ্টা করেও তার বাবা মাকে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে বুঝাতে পারিনি। এমনকি নীলা তার বাবা মা’র কাছে আত্মহত্যার ভয় দেখালেও তারা রাজি হয়নি। শেষ অবধি আমার নীলা তার মনের বিরুদ্ধে প্রাণহীন এক বস্তুর মতো স্বামীর ঘর করছে। আর আমি আমার প্রিয় মানুষটিকে না পাওয়ার বেদনায় চাপা কষ্ট নিয়ে এখনো বেঁচে আছি।
Email: shahriarrepon2025@gmail.com