আন্তর্জাতিকরাজনীতিসর্বশেষ নিউজ

কাঙ্ক্ষিত মার্কিন নির্বাচন আগামীকাল

বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এখন মার্কিন মুল্লুকে!

নিউজরুমবিডি.কম: আগামীকাল সেই কাঙ্ক্ষিত সময়। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল। ইতিমধ্যেই প্রচার- প্রচারণার সমাপ্তি ঘটছে আজ। আগামীকাল ভোটাররা তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন তারা কাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে চান। বলা হয়, বাস্তবে এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কেবল আমেরিকার নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে। কেননা, বিশ্বের কূটনীতি এবং সামরিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। আগামীকাল মূল ভোট হলেও দেশটিতে আগাম ভোট শুরু হয়েছে আগেই এবং সাত কোটিরও বেশি ভোটার ইতিমধ্যে ভোটও দিয়েছেন। গতবারের চেয়ে এবারের আগাম ভোট বেশি পড়বে বলে আশা করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বি কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও আরো চার প্রার্থী নির্বাচনে লড়াই করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, ইসরাইলি আগ্রাসনে বিপর্যস্ত গাজা ও লেবানন। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা ক্রমেই বাড়ছে। ইরান-ইসরাইলও যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। তাইওয়না নিয়ে চীনের সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে মার্কিন প্রশাসনের। এ নিয়ে দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব এশিয়া সংকটে পড়েছে। নতুন করে সংকট সৃষ্টি হয়েছে ভারত ও কানাডার মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে খালিস্তানি নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বাইডেন প্রশাসন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসনের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের পালটা অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার চেষ্টা হচ্ছে ব্রিকস জোটের মাধ্যমে।

অস্থিতিশীলতা ও গৃহযুদ্ধ এবং সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত সুদান, মালি, সোমালিয়া, কঙ্গো, বুরকিনাফাসোসহ আফ্রিকার বহু দেশ। শুধু ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। মার্কিন নির্বাচন নিয়ে তাই চিন্তায় ইউরোপও। এই অঞ্চলে বেশিরভাগ সমর্থন যাচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের কাছে। ট্রাম্প জিতলে ইউরোপ সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন সেখানকার নেতারা। বিশ্বের এসব সংকটের মুহূর্তে কালকের ভোটেই জানা যাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস কি বাইডেনের দেখানো পথ অনুসরণ করে তার দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাবেন? নাকি ‘বিশ্ববাদ নয়, আমেরিকাবাদ’ বিশ্বাস নিয়ে আবারো ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ নিয়ে পথ চলবেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি এবং অনেক জোটে দেশটির প্রধান ভূমিকার কারণে তারা এখনো বিশ্বমঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে দেশে দেশে গণতন্ত্রের সংকট বাড়বে না কমবে তাও নির্ধারিত হতে পারে মার্কিন নির্বাচনের মাধ্যমে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিস জয়লাভ করলে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতিসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজের বর্তমানে অনুসৃত নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির খুব একটা পরিবর্তন না-ও হতে পারে। তিনি যার রানিংমেট এবং যার শারীরিক অসমর্থতার দরুন আকস্মিকভাবেই তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পেয়েছেন, সেই জো বাইডেনের নীতির ধারাবাহিকতাই অক্ষুণ্ন রাখবেন কমলা হ্যারিস। তবে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হতে পারে, যদি তার বদলে এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বেশিরভাগ ভোটার কাল মঙ্গলবার ভোটকেন্দ্রে গিয়েই ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এবং এরপরে ব্যালট গণনা করা হবে। তবে পোস্টাল ভোটিং সিস্টেম ব্যবহার করে বা আগাম ভোটিংয়ের দিনগুলোতে অনেকে আগেই ভোট দিয়ে ফেলেছেন। ইতিমধ্যে সাত কোটিরও বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে জানা গেছে।

এবার দেখার পালা আগামীকালের চূড়ান্ত লড়াইয়ে বিজয়ী হয় কে! হাতি নাকি গাঁধা!

Tags

Related Articles

Close