আন্তর্জাতিকসর্বশেষ নিউজ
২৫ বছরের স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটতে যাচ্ছে মিয়ানমারে
ডেস্কনিউজ, নিউজরুমবিডি.কম: রোববার মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহাসিক নির্বাচন। নির্বাচনে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নজির স্থাপন করেছেন। আর বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ের হাতছানি অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এর সামনে। এতে করে মিয়ানমারে অবসান ঘটতে যাচ্ছে ২৫ বছরের স্বৈরতন্ত্রের।
রোববারের নির্বাচনটি হয়েছে খুবই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথাও কোনো বড় গন্ডগোল বা হাঙ্গামার খবর পাওয়া যায়নি।
দেশটির সেনাপ্রধান মিং অং লেইং আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্বাচনে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ।
এবারের নির্বাচনে ১৯৯০ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও জানিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন। ওই বছর সু চির দল এনএলডি বিপুল ভোটে জয় পেলেও ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় সেনাবাহিনী।
হিতেয় ও বলেন, নির্বাচনে আমাদের পরাজয়ের কারণ খুঁজে দেখা হবে। আমরা সব ধরনের ফলাফল মেনে নেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুত আছি। তবে এখনো জানি না সর্বশেষ ফল কী হবে।’
রোববার রাত থেকেই এনএলডি সমর্থিত লাখো জনতা ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন। আজ সোমবার দিনের শুরুতে প্রাথমিক ফলালফে এনএলডি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছিল। প্রথম দিকে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে মাত্র ১২টি আসনের ফল প্রকাশ করে। এতে সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি ১২টিতেই জয় লাভ করে।
আজ সকালের দিকে সু চি সারা দেশের জনগণকে শান্ত ও সুস্থির থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি ফলাফল কী হবে তা আপনাদের সবারই জানা। তাই আপনারা ধৈর্য ধরুন ও শান্ত থাকুন।’ নিজ দলের জয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান সু চি। আর যারা পরাজিত হয়েছেন, তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
ফল ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। যদিও কমিশনের দাবি, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অপ্রতুলতার কারণেই ফল প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে তাদের।
‘কারো স্বামী, বাবা, স্ত্রী বা সন্তান বিদেশি নাগরিক হলে সে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতে পারবে না’- এমন একটা ধারা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত থাকায় নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয় পেলেও শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। বেসামরিক লেবাসে জান্তা প্রধান থেইন সেইন ২০১১ সালে এক তরফা নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে সংবিধানের এ ধারা সংশোধন করেন। ফলে প্রেডিডেন্ট হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায় সুচি’র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এই নির্বাচনকে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের একটি পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেতে তাদের আরো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।