জাতীয়বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
কালীগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ বাবার স্বপ্ন ট্রাকের চাপায় পিষ্ট
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে ৫ জনই যশোর এমএম কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের। কলেজে পরীক্ষা শেষে তারা বাড়ি ফিরছিল। তারা হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের রনজিত দাসের ছেলে সনাতন দাশ (২৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে রেশমা (২৬), কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিনদিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদ সোহাগ (২৫), কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান (২৪) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নাথকুন্ডু গ্রামের ইউনুস আলী (২৬)। নিহত প্রত্যেকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শিক্ষা জীবনের শেষ পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাস দুর্ঘটনায় প্রান গেল তাদের।
কালীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাটপাড়া গ্রামের সনাতন দাশের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকে মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর বাবা-মা। রাজমিস্ত্রীর কাজ করে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছিলেন বাবা রনজিৎ দাস। বাবা রনজিৎ দাস বলেন, খুব কষ্ট করে ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছি। খেয়ে না খেয়ে তার খরচ দিচ্ছিলাম। একদিন সে চাকরি করে অভাব ঘুচাবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের নিহত মোস্তাফিজুর রহমানের ভাই নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের বড় আশা ছিল ভাইকে নিয়ে। বড় আশা করে তাকে লেখাপড়া শিখানো হয়েছে। চালকের অসচেতনতায় বাস দুর্ঘটনায় প্রান গেল তার। আমার পরিবারের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। নিহতের দুলাভাই আলমগীর কবির বলেন, পরিবার ও সরকার এত টাকা খরচ করে তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছে। গাছটি লালন পালন করে মাত্র ফুল ফুটেছে। সে থেকে ফল পাওয়ার আশা ছিল প্রত্যেকের। সেই ফুল অকালে ঝরে গেল। এ দায় ভার কার।
বুধবার বিকেলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকায় যশোর থেকে মাগুরাগামী জেকে পরিবহনের একটি বাস বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উপর আড়াআড়ি হয়ে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন ও পরে ৩ জন মারা যান।