বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
কালিহাতীতে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীর চোখ উপড়ে ফেললো স্বামী
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীর চোখ উপড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। রোববার ভোর রাতে উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মাইস্তা চৌধুরীবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আহত আঁখি আক্তারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আঁখি আক্তারের চাচা মো. খোকন মিয়া জানান, গত সাত বছর আগে মির্জাপুর উপজেলার বুসুন্দী গ্রামের আব্দুল রহমানের ছেলে ফারুক হোসাইনের সঙ্গে তার ভাতিজির বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালোই চলছিলো। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। ফারুকের বাবা বিদেশ থাকায় ফারুক ও তার মা মাদক ব্যবসা করতে থাকেন। পরবর্তীতে ফারুক তার স্ত্রী আঁখি আক্তারকে মাদক বিক্রি করতে বললে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কয়েক বছর আগে আঁখি তার বাবার বাড়ি চলে আসে। পরবর্তীতে শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা করে আঁখি আক্তারকে ফারুকের বাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরও ফারুক তার স্ত্রীকে মাদক বিক্রি করতে বলে। কিন্তু আঁখি আক্তার রাজি না হওয়ায় একাধিকবার তার সঙ্গে ঝগড়া হয় ও শালিসি বৈঠক হয়।
তিনি আরও জানান, গত এক বছর আগে ফারুকের কাছ থেকে আঁখি চলে এসে গাজীপুরে এক গার্মেন্টস চাকরি করতে থাকে। সেখানেও তাকে ফোন করে চোখ উপড়ে ফেলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয় ফারুক। গত রমজান মাসে ফারুক গাজীপুরে আঁখির বাসায় গিয়ে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আঁখিকে মারাত্মক আহত করে। ওই ঘটনায় গাজীপুর সদর থানায় এক সাধারণ ডায়েরীও করা হয়। তারপরেও একাধিকবার মোবাইল ফোনে আঁখি ও তার পরিবারের চার সদস্যকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ফারুক। রোববার ভোর রাতে সে সিঁধ কেটে আঁখির বাবার বাড়িতে আঁখির ঘরে প্রবেশ করে কাচি (সিজার) দিয়ে আঁখির চোখে ঘা দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় আঁখির চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ফারুককে খুঁজতে থাকে। অনেক খোঁজার পর ফারুককে পাওয়া যায়নি। পরে আঁখিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার আনোয়ার হোসেন জানান, ফারুক হোসাইন মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মাদক বিক্রি নিয়ে প্রায়ই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আঁখির চোখ উপড়ে ফেলে ফারুক পালিয়ে যায়।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুন জানান, এ ঘটনা জানতে পেরে একজন এসআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রæত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।