বিনোদন

আজ তপন চৌধুরীর জন্মদিন

নিউজরুমবিডির পক্ষ থেকে জনপ্রিয় এই গায়ককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

নিউজরুমবিডিঃ আজ কন্ঠশিল্পী তপন চৌধুরীর জন্মদিন। নিউজরুমবিডির পক্ষ থেকে জনপ্রিয় এই গায়ককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। তপন চৌধুরী বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের এক বিস্সয়কর নাম. আজকের এই দিনে তিনি চট্টগ্রামের জন্ম গ্রহণ করেন।তপন চৌধুরীর বাবা এইচ আর চৌধুরী, মা জিন্দু প্রভা দেবী। তপন চৌধুরীর গানে হাতেখড়ি তিন গুনী ওস্তাদের নিকট। এরা হলেন, শ্রদ্ধেয় প্রিয়দারঞ্জন সেন, মিহিরলাল ও সঞ্জিত। এদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের অগ্রজ দল সোলস’র সাথে গেয়েছেন দীর্ঘ ২২ বছর।এরপর গড়ে তুলেন একক ক্যারিয়ার।

১৯৭৯ সালে বাংলাদেশে টেলিভিশনে ব্যান্ড দল ‘সোলস’ এর হয়ে তপন চৌধুরীর গাওয়া ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ গানটি প্রচার হবার পর শিল্পী হিসেবে রাতারাতি তারকা বনে যান তপন চৌধুরী। নকীব খানের লেখা ও পিলু খানের সুরে গাওয়া এই গান দিয়েই সামনের পথে এগিয়ে চলেন। ১৯৮১ সালে যখন বাজারে আসে গানটি তখন এ্যালবামে রাখা হয়। পরবর্তীতে এই এ্যালবামেরই তপন চৌধুরীর গাওয়া ‘ মন শুধু মন ছুঁয়েছে ‘ গানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ধারাবাহিক নাটক ‘প্রতিশ্রুতি’ তে ব্যবহারের পর যেন এই গানের জনপ্রিয়তা আরো বেড়ে যায়। এই গানের চিত্রায়ণে সে সময় অভিনয় করেছিলেন মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমেরিকা প্রবাসী অভিনেত্রী যুথী।

১৯৮৪ কিংবা ১৯৮৫ সালে তপন চৌধুরীর প্রথম একক গানের ক্যাসেট ‘তপন চৌধুরী’ সারগামের ব্যানারে বাজারে আসে। আইয়ুব বাচ্চুর সুর সঙ্গীতে এই এ্যালবামটির সবগুলো গানই শ্রোতাদের মন কেড়ে নেয়। এরপর নানান সময়ে অরাজিতা, তুমি নীল আকাশ, অনুশোচনা, স্মৃতির চিহ্ন, আমার পৃথিবীসহ অনেক এ্যালবাম বাজারে আসে।

তবে তপন চৌধুরীর প্রথম এ্যালবামের পর যে এ্যালবামটি সবচেয়ে বেশি শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিলো সেটি হচ্ছে ‘অনুশোচনা।’ তপন চৌধুরীর বিয়ে করেন ১৯৯৬ সালে। আর এর পরপরই এ্যালবামটি বাজারে আসে। এই এ্যালবামের যদি ভুল করে কাছে এসে থাকি, যদি কখনো জানতে পারো, মনতো সেই কবে মেরে গেছে, জীবনের গল্প একটাই, তোমার জন্য সব হারাতে পারি, কাল আমি ভুল করে পুরোনো সে চিঠি পড়ে, আমি সুখে আছি আমি ভালো আছিসহ প্রতিটি গানই ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এই এ্যালবামে গান লিখেছিলেন লিটন অধিকারী রিন্টু, আশিক মাহমুদ, সেলিম কামাল, মিলন খান, কামরুজ্জামান কাজল, কবির বকুলসহ আরও অনেকে।

চলচ্চিত্রের গানে তপন চৌধুরীর শুরুটা আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘ভাত দে’ ছবিতে কতো কাঁদলাম গানটি গাওয়ার মধ্যদিয়ে। তবে চলচ্চিত্রে যে গানটি সবচেয়ে বেশি শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিলো সেটি হচ্ছে নায়ক রাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘ঢাকা ৮৬’ ছবির গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ‘পাথরের পৃথিবীতে কাঁচের হৃদয়’ গানটি। এতে তপন চৌধুরীর সহশিল্পী ছিলেন শাকিলা জাফর। একই শিল্পীর সাথে তার আরেকটি জনপ্রিয় গান হচ্ছে ‘ তুমি আমার প্রথম সকাল।’ লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা ও আশিকুজ্জামান টুলুর সুরে গাওয়া এই গানটি বলা যায় প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানেই তপন-শাকিলাকে গাইতেই হয়।

মৌসুমী অভিনীত ‘মিস ডায়না’ ছবির কবির বকুলের লেখা ‘এতো ভালোবেসোনা আমায় বিনিময়ে আমি কি দেবো তোমায়-এ প্রেমের প্রতিদান দেয়া যাবেনা’ গানটিতে কন্ঠ দিয়েও বেশ আলোচনায় এসেছিলেন তপন চৌধুরী। খুব কম প্লে-ব্যাক করলেও যে ক’টি করেছেন তার সবগুলোই ছিলো বেশ আলোচনায়। ওপার বাংলার জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী মিতালী মুখার্জির সাথে একটি দ্বৈত গানের এ্যালবাম করেছিলেন তপন চৌধুরী। এ্যালবামটির নাম ছিলো ‘নি:শ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’। এই এ্যালবামের আজ ফিরে না গেলেই নয়, আকাশের সব তারা ঝরে যাবে দিন কী রাতে সাজ প্রভাতে তোমারই আছি এইতোসহ প্রায় সবগুলো গানই শ্রোতাপ্রিয়তা পায়।

তপন চৌধুরী এমনই একজন শিল্পী যার কোন একটি গান একজন গাইলে তার পরের লাইনটি অন্য কেউ অনায়াসে বলে যেতে পারেন। মন শুধু মন ছুঁয়েছে, কান্দো কেন মন, তুমি আমার প্রথম সকাল, আজ ফিরে না গেলেই কী নয়, আকাশের সব তারা ঝরে যাবে, যদি ভুল করে কাছে এসে থাকি, যদি দেখো ঐ নীলিমা, পাথর কালো রাত, তাজমহলের সেই মমতাজ নও, আমার গল্প শুনে, পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে, তোমার উঠোন আজ ভরে আছে সুখে, অনাবিল আশ্বাসে হৃদয়ের বন্দরেসহ আরো কতো শত শত জনপ্রিয় গান।

এ পর্যন্ত ৩০০শ’র অধিক চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন। বাংলা গানকে বাংলা ভাষাভাষী শ্রোতাদের কাছে যারা একটি বিশেষ গ্রহণযোগ্যতায় নিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে তপন চৌধুরী অন্যতম। চট্টগ্রামের সন্তান তপন চৌধুরী এখন নিয়মিত কানাডাতে বসবাস করলেও দেশের টানে, গানের টানে স্ত্রী শর্মিলা চৌধুরী ও একমাত্র সন্তান সত্যমকে ছেড়ে প্রায়ই ঢাকা চলে আসেন। এবারও ঠিক তেমনি ফেরা। গুণী এই শিল্পীর আগামীও থাকুক গানময়।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া

Tags

Related Articles

Close