বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

ফুলবাড়ীতে যত্রতত্র বাসযাত্রী উঠানামা করায় বাড়ছে যানজট, ঘটতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা

dinajpur 23.7 -1মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারি কলেজ রোডের চার রাস্তার মোড় সহ আরও যত্রতত্র স্থানে বাসযাত্রী উঠানামা করায় যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা।

ফুলবাড়ী পৌরশহরের মাঝ দিয়ে দিনাজপুর টু ঢাকা মহাসড়ক। এই সড়ক দিয়ে ঠাঁকুরগাও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর জেলার দুরপাল­ার যানবাহনগুলো রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, ঢাকা, সিলেট, চিটাগাংসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। ফলে প্রতিদিনেই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে হাজার হাজার যানবাহন। শহরের এই সড়কটি প্রধান সড়ক হওয়ায়, এই সড়কের পাশেই রয়েছে শহরের প্রধান প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফুলবাড়ী থানা কার্যালয়, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়সহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এ কারণেই একই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে ফুলবাড়ীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দূরপাল­ার যানবাহন ও পথচারীরা একই রাস্তায় চলাচল করায় সর্বদাই এই রাস্তাটিতে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং প্রতিদিনই ঘটে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা।

শহরের এই প্রধান সড়ক সড়কটির একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হচ্ছে সরকারি কলেজ রোডের চার রাস্তার মোড়।পুর্ব দিক দিক দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ হয়ে ঢাকা যাওয়া যায়, পশ্চিম দিক দিয়ে জেলা সদর দিনাজপুর, ঠাঁকুরগাও, পঞ্চগড় যাওয়া যায়। আর উত্তর দিক দিয়ে ফুলবাড়ী দাখিল মাদ্রাসায় যাওয়া যায় এবং দক্ষিণ দিক দিয়ে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ, সুজাপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সুজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু কলেজ সহ অসংখ্য স্কুল কলেজ ও মাদিলাহাট সহ চারটি ইউনিয়ন পরিষদ যাওয়ার রাস্তা। এছাড়াও ফুলবাড়ীর সবচেয়ে বড় আবাসিক এলাকা সুজাপুরে হাজার হাজার মানুষের বসবাস।

এ কারণেই এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে ফুলবাড়ীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দূরপাল­ার যানবাহন ও পথচারীরা একই রাস্তায় চলাচল করায় সর্বদাই এই মোড়টিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফুলবাড়ী শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এই সরকারি কলেজ রোডের চার রাস্তার মোড়। আবার এই মোড় ঘেষা জোড়া ব্রীজ হওয়ায় যানবাহনের চাপ বেশি। অথচ এই মোড়ে প্রতিদিনই প্রতিনিয়ত বাস দাড়িয়ে বাসযাত্রী উঠানামা করছে। ফুলবাড়ীতে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্ট্যান্ড থাকা সত্তে¡ও এই মোড়ে বাস দাড়িয়ে বাসযাত্রী উঠানামা করায় অপর প্রান্ত ও উত্তর-দক্ষিণ দিক থেকে যানবাহন চলাচল করার সমস্যা দেখা দেয়।

ফুলবাড়ী জোড়া ব্রীজের পূর্ব দিকে ঢাকা যাওয়ার দুরপাল­ার সবগুলো বাসের কাউন্টারগুলোর অবস্থান। সেখানে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত দুরপাল­ার বাস যাত্রীর পাশাপাশি মালামাল উঠানামা করা হয়। সেখানে দুরপাল­ার বাস যাত্রীর পাশাপাশি মালামাল উঠানামা  করার কারণে এমনিতেই সবসময় যানজট লেগে থাকতো, এখন সেখানে আন্তঃজেলা মেইল বাস, বিআরটিসি ও লোকাল বাসও দাড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করে। ফলে সেখানে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। আগে বাসস্ট্যান্ড, নিমতলা মোড় ও রেল স্টেশন এর কাছে বাস দাড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করা হতো। আর এখন নির্দিষ্ট কোন স্থান নাই বাসস্ট্যান্ড, নিমতলা মোড় ও রেল স্টেশন এর পাশাপাশি সরকারি কলেজ রোডের চার রাস্তার মোড়, জোড়া ব্রীজের পূর্ব দিকে ঢাকা যাওয়ার দুরপাল­ার সবগুলো বাসের কাউন্টারগুলোর কাছে বাস দাড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করা হয়।

এব্যাপারে দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মহসিন আলী সরকার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, যত্রতত্র বাস দাড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করার বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে। যেখানে-সেখানে বাস যেন না দাড়াতে পারে, যানজটের সৃষ্টি না হতে পারে এটা দেখার জন্য ট্রাফিক পুলিশের দরকার। এই বিষয়টি ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব।

জানা গেছে, ঢাকা মোড়, নিমতলা মোড় ও ছোট যমুনা জোড়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে সরকারি কলেজ মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করলেও গত ১৪ বছর থেকে সেই ট্রাফিক পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২০০৩ সালে ক্লিনহাট অপারেশনের সময় ট্রাফিক পুলিশের স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ এনে ফুলবাড়ী থেকে ট্রাফিক পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়। এর পর ১৪ বছর কেটে গেলেও এখন পর্যন্ত সেখানে ট্রাফিক পুলিশ দেয়া হয়নি। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় চলাচলরত যানবাহনগুলো চলছে তাদের ইচ্ছেমতো, ফলে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফুলবাড়ী থানার ওসি মোকছেদ আলী জানায়, পৌর শহরের মধ্যে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ফুলবাড়ী থানার ৩ সদস্যের একটি দল সর্বদায় সড়কে দায়িত্বে থাকেন। কিন্তু মাত্র ৩ জন লোক দিয়ে সব জায়গায় দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না। যার ফলে যানজট সর্বদাই লেগে থাকে।

ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মুর্তুজা সরকার মানিক বলেন, শহরে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় যানজট আর সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আনুমানিক সংখ্যা উপস্থাপন করে বলেন, প্রায় শতাধিক মানুষ প্রতিবছরেই এ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এর মধ্যে অনেকেই প্রাণ হারালেও অন্যরা পঙ্গুত্ববরণ করে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। তাই ফুলবাড়ী পৌরবাসীকে সড়ক দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করতে ট্রাফিক পুলিশ প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Tags

Related Articles

Close