বাংলাদেশ
ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে যমুনার পানি ত্রাণের অপেক্ষায় টাঙ্গাইলের বানভাসী মানুষ
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : গত কয়েকদিন ধরে উজানের ঢল আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে যমুনা নদীর পানি। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে যমুনা পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ১৯ সে.মি বেড়ে বিপদসীমার ৬০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভূঞাপুর, কালিহাতী ও গোপালপুর উপজেলার ৩০টি’র বেশি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকা ছাড়াও পানি বাড়তে থাকায় বুধবার (১২ জুলাই) থেকে ভূঞাপুর পৌর এলাকার ফকির পাড়া, চর বেতুয়া, চর বামন হাটা, চর কুতুবপুর গ্রামে নতুন করে যমুনার পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে বন্যাকবলিত মানুষ জীবন বাঁচাতে উঁচু জায়গা খুজে বেড়াচ্ছেন। দিনভর ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা, গোবিন্দাসী ও অর্জুনা ইউনিয়নের পানিবন্দি বহু মানুষ ঘরের মালামাল ও গবাদিপশু দিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বাঁধ এবং বাঁধের পূর্ব পাড়ের উঁচু জায়গাগুলোতে। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিনভর তাদের ওই সব মালামাল স্থানান্তরের দৃশ্য চোখে পড়ে।
গাবসারা ইউনিয়নের জালাল উদ্দিন, তমছের আলী, জাহাঙ্গীর মিয়া, অর্জুনা ইউনিয়নের লেয়াকত আলী, হাসমত ও বিল্লাল জানায়, নৌকা জোগাড় করে মোটামুটি মালামাল নিতে সক্ষম হয়েছেন। অনেকেই নৌকার অভাবে মালামাল সময় মতো পরিবহন করতে না পারায় যমুনা নদীর প্রচুন্ড ¯্রােতের তোড়ে ঘরের মালামাল, গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি, গাছপালা, ধান-চালসহ অন্যান্য আসবাপত্র ভেসে গেলেও ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া করার কিছুই নেই তাদের। এক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা তারা পাচ্ছে না।
স্থানীয়রা যায়, কেউ কেউ উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিলেও অনেকেই এখনো পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। দুর্গত এলাকায় এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছেনি। খাবারের পাশাপাশি নিজেদের থাকার জায়গা এবং গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। আর কিছুটা পানি বাড়লে ওইসব ইউনিয়নে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
এদিকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসন বলছে, ক্ষতিগ্রস্থদের প্রকৃত তালিকা না পাওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালানা করতে বিলম্বিত হচ্ছে। এই অবস্থায় সরকারি ত্রাণের অপেক্ষায় বসে আছে টাঙ্গাইলের একাধিক এলাকার দুর্গত মানুষ।
এ বিষয়ে, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং কয়েকদিনের বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাবাবিক রাখতে সব ধরনের চেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে।