ক্যাম্পাসসর্বশেষ নিউজ
রাবির ডাইনিংয়ের খাবার মূল্য হঠাৎ বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
শফিকুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলের ডাইনিংগুলোতে খাবারের মূল্য হঠাৎ করেই বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরের খাবারের মূল্য ৪ টাকা বৃদ্ধি করে ২৪ টাকা এবং রাতের খাবারের মূল্য ২ টাকা বৃদ্ধি করে ১৮ টাকা করা হয়েছে। বুধবার দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিংগুলোতে এ খাবার মূল্য কার্যকর হয়।
এদিন দুপুরে খেতে গিয়ে হঠাৎ খাবারের মূল্য বৃদ্ধি করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তবে খাবারের দাম বাড়লেও মান বাড়েনি বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বন্যায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হলে চাউলের দাম বৃদ্ধি পায়। এতে ডাইনিংয়ে লোকসান হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রভোস্ট কাউন্সিল বরাবর খাবার মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানায় ভোজনালয় শ্রমিক ইউনিয়ন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুন প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহŸায়ক ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক বিপুল কুমার বিশ্বাসকে আহŸায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে গত সোমবার খাবার মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাধ্যক্ষ কাউন্সিল। হল প্রশাসনের এই হঠকারী সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি সঙ্কটে পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
জানা যায়, চাউলের মূল্য বৃদ্ধির অযুহাতে ২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় ডাইনিংয়ে দুপুরের খাবার ১৬ থেকে ২০ টাকা এবং রাতের খাবার ১৩ থেকে ১৬ টাকায় বৃদ্ধি করে। ওই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা করেনি। এবারও একইভাবে খাবার মূল্য বৃদ্ধি করেছে হল প্রশাসন।
এতে ডাইনিংবিমুখ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশ বৃদ্ধি পাবে। এই ডাইনিংবিমুখ শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত অর্থ ও সময় দুইভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি সঠিকভাবে তদারকি করা হতো তাহলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা ভালো খাবার পেত, অন্যদিকে বিদ্যুৎও সাশ্রয় হতো।
শাহ্ মখদুম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শিমুল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ করেই এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আর শুধু চাইলের দামের অজুহাতে প্রশাসন দাম বাড়াতে পারেন না।’
মুন্নজান হলের আনিছা বলেন, আমাদের ডাইনিংয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। এর কোন উন্নয়ন না করে এভাবে খাবারের দাম বাড়ানোটা রীতিমত অন্যায়।’
আবাসিক হলগুলোর খাবার মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান বলেন, খাবারের মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ভোজনালয় শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে প্রভোস্ট কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহবায়ক ভালো বলতে পারবেন।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহবায়ক ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক বিপুল কুমার বিশ্বাস বলেন, এতো কমদামে খাবার কোথাও আছে? গত ২০১০ সালে ২৫% ও ২০% হারে দুপুর ও রাতের খাবার মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা ১২% ও ১৫% হারে বাড়িয়ে খাবার মূল্য নির্ধারণ করেছি। যে হারে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য এটাই তো বড় সুবিধা। সবার কথা বিবেচনায় রেখে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
খাবারের মানের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ভোজনালয় শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।