জাতীয়পরিবেশবাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

ফুলবাড়ীতে সরকারি নিয়ম না মেনে রাস্তার পাঁচ শতাধিক গাছ কর্তন

dinajpurমোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়ারি ইউনিয়নের পৃথক দুইটি গ্রামীণ রাস্তার সৃজনকৃত পাঁচ শতাধিক গাছ সরকারি নিয়মনীতি না মেনে নিজ খেয়ালখুশি মতো কেটে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের অংশিদারিত্বের নামে গাছ কেটে বিক্রি করা হলেও টাকা জমা হয়নি ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব তহবিলে।

১নং এলুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা নবিউল ইসলাম ইউনিয়নের খাজাপুর গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অম্বরিশ চৌধুরীর বাড়ি থেকে ইসাহাক আলীর বাড়ি পর্যন্ত গ্রামীণ রাস্তায় অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে লাগানো ইউক্যালিপটাসের তিন শতাধিক গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। একইভাবে উপজেলার বড়গাছা এলাকায় সৃজনকৃত দুই শতাধিক গাছও বিক্রি করে দিয়েছেন। খাজাপুর এলাকার কর্তনকৃত ইউক্যালিপটাস গাছের বড় বড় গোলাই ঢাকায় গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে পাঠানোর জন্য ট্রাকে তোলা হচ্ছিল।

গাছ ক্রেতা উপজেলার নারায়নপুর ফতেপুর গ্রামের মো. শাহিন বলেন, চেয়ারম্যানে কাছ থেকে ২লাখ ৬১হাজার ১০০টাকায় গাছগুলো কিনে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

এ সময় সেখানে উপস্থিত খাজাপুর ভূমিহীন সমিতির (যা বর্তমানে অস্তিত্বহীন) সভাপতি বিদাসু চন্দ্র রায় ও সদস্য বিরাশ চন্দ্র বলেন, ১৫বছর পূর্বে গাছগুলো অংশিদারিত্বে ভিত্তিতে লাগানো হয়েছে। এখন গাছগুলো কেটে বিক্রি করা হয়েছে। গাছের টাকা চেয়ারম্যানের কাছে জমা আছে পরে আমাদের ভাগ দিবেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা নবিউল ইসলাম বলেন, পূর্বের ইউএনও সাহেবের অনুমতি এবং স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে খাজাপুর ভূমিহীন সমিতির নামে গাছগুলো ঐ রাস্তাগুলো লাগানো হয়েছিল। বর্তমান ইউএনওকে বিষয়টি জানিয়ে গাছগুলো কেটে বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রিকৃত গাছের মূল্যের শতকরা ২৫ভাগ টাকা ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব তহবিলে জমা করা হয়েছে। সমিতি ও রাস্তার পার্শ্বের জমি মালিকদের ন্যায্য পাওনা সচ্ছতার ভিত্তিতে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

এলুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সাজেদুর রহমান বলেন, সরকারি গাছ কাটা ও বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। গাছ বিক্রির কোন টাকা ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব তহবিলে জমা হয়নি।

বন বিভাগের ফুলবাড়ী বিট কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারি গাছ কাটা এবং বিক্রির ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। ঐ আবেদনটি ইউএনও সাহেব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য বিট কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন। তখন বিট কর্মকর্তা সেই বাগানের গাছের নম্বর দেয়াসহ মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার পরই গাছ কাটা ও বিক্রি করা যাবে। তবে এলুয়ারি ইউনিয়নে কোন সরকারি গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এহেতেশাম রেজা বলেন, বন বিভাগ কর্তৃক গাছের নম্বর এবং মূল্য নির্ধারণ ছাড়া সরকারি গাছ কাটা যাবে না। গাছ কাটার বিষয়ে এলুয়ারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একটি চুক্তিনামা কাগজ নিয়ে তার সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি কোন গাছ কাটা বা বিক্রির কোন অনুমতি দেননি। রাস্তার গাছ কাটা এবং বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

Related Articles

Close