বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

হাজার হাজার বস্তা সার গায়েবের সংবাদ প্রকাশে ঝিনাইদহ জেলাজুড়ে তোলপাড়

fartilaijar-pic-jhenaidahজাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারী বাফার সার গোডাউন থেকে হাজার হাজার বস্তা ইউরিয়া সার গায়ের হওয়ার খবর প্রকাশের পর প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদারের নির্দেশে কালীগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শাহানাজ পারভিন বাফার গোডাউন পরিদর্শন করেছেন।

তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেয়ে তিনি সরকারী বাফার গোডাউনে গিয়ে সার কম থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। গোডাউন ইনচার্জ মাসুদ রানা তাকে জানিয়েছেন, তিন মাস আগে এ বিষয়ে বিসিআইসির একটি তদন্ত টিম তদন্ত করেন কিন্তু কোন রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। কারো শাস্তিও হয়নি।

বাফার গোডাউনের কারা এই সার গায়েবের সাথে জড়িত তাও চিহ্নিত হয়নি। এদিকে শুক্রবার সরকারী বাফার গোডাউনের হাজার হাজার বস্তা ইউরিয়া সার গায়েবের খবর পত্রিকায় প্রকাশের পর গোডাউন ইনচার্জ মাসুদ রানা প্রথমে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।

পরে তিনি জানান, তিনি ৩ মাস আগে যোগদান করেছেন। তার আসার আগ থেকেই সার সর্ট রয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০১৫/১৬ অর্থ বছরের ৫৪৭ মেট্রিন টন অর্থাৎ ১০ হাজার ৯৪০ বস্তা সারের কোন হদিস মিলছে না। যার আন্তর্জাতিক বাজার মুল্য ১ কোট ৮৬ লাখ টাকা।

বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে সার গায়েব হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করে বিসিআইসির তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি। কে বা কোন চক্র এই সার গায়েবের সাথে জড়িত তাও রয়েছে রহস্যাবৃত্ত।

অভিযোগ উঠেছে দায়ী ব্যক্তিদের বাঁচানোর জন্য বিসিআইসি তদন্ত রিপোর্ট ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চছে। ফলে তিন মাসেও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা যায় নি।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার বিসিআইসির ২১৫ জন তালিকাভুক্ত ডিলার কালীগঞ্জ সরকারী বাফার গোডাউন থেকে সার নিয়ে থাকে।

সার ডিলারদের অভিযোগ বাফার কর্মকর্তারা আর্থিক সুবিধা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কম ও জমাট বাঁধা সার সিরিভ করে থাকেন। এ নিয়ে তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। ঝিনাইদহে পাঠানো সরগুলো দীর্ঘদিন বন্দরের ঘাটে পড়ে থাকায় সারের ওজন কমে যাওয়ার পাশাপাশি গুনগতমান নষ্ট হয়ে গেছে। এসব সারের বস্তা ফাটা, ছেড়া ও জমাট বাঁধার কারণে ডিলাররা নিতে চান না।

ফলে কালীগঞ্জ বাফার গোডাউনে ৩/৪ হাজার বস্তা জমাট বাঁধা সার পড়ে আছে। এই নিম্নমানের সার কৃষকদের মাঝে বিক্রি করা হচ্ছে।

সম্প্রতি বিসিআইসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল ও পরিচালক আব্দুল হাই কালীগঞ্জ বাফার গোডাউনে এসে সঠিক ওজন দিয়ে জমাট বাঁধা এ সব সার রি প্যাক করে বিতরণের নির্দেশ দিয়েছিলো। কিন্তু প্রায় ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও জমাট বাঁধা সার তেমনই পড়ে আছে। সেগুলো রি প্যাক করা হয়নি।

Tags

Related Articles

Close