বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
ফুলবাড়ীতে জাল দলিলসহ আটক ৩
মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শতাধিক জাল দলিল ও দুই শতাধিক সিল উদ্ধারসহ ৩জনকে আটক করেছে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ।
আটককৃত তিনজন হলেন, উপজেলার পৌর এলাকার থানাপাড়া গ্রামের মৃত সুলতানুল ইসলামের ছেলে দলিল লেখক সোহরাব হোসেন সরকার (৪৫), একই গ্রামের একরামুল হকের ছেলে নাজির ইসলাম নয়ন (২৩) ও শ্রীহরিপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান আলীর ছেলে মহরী আব্দুল জলিল (৫০)।
বৃহস্পতিবার (৩০জুন) সন্ধা ৬টায় পৌরশহরের পূর্ব গৌরীপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান জাল দলিল তৈরির সরঞ্জামসহ তাদেরকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় ওইদিন রাত ৮টায় ফুলবাড়ী থানার এস আই আক্কেল আলী বাদী হয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধে ২৫ এর ক ধারায় ধৃত ৩জন সহ অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং-১৪।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদ আলী বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনার সময় তার (ওসি’র) নেতৃত্বে এসআই আক্কেল আলী ও এসআই পিন্টু কুমার দাসসহ একদল পুলিশ পৌর এলাকার রেজিষ্ট্রী অফিস সংলগ্ন আটক দলিল লেখক সোহরাব হোসেনের সুরমা ট্রেডার্স নামের ষ্ট্যাম্প বিক্রি ও কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে অভিযান চালায়। ঐ দোকান থেকে শতাধিক বাংলাদেশি ও পাকিস্তানী জাল দলিল ও দলিল তৈরির ষ্ট্যাম্প, জেলার ১৩ উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি), সাব-রেজিষ্ট্রার, সহকারি সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নামের এবং দপ্তরের দুই শতাধিক সিল উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে জাল দলিল সৃষ্টিকারী চক্রের হোতা দলিল লেখক সোহরাব হোসেনসহ তার সহযোগী নাজির ইসলাম নয়ন ও মহরী আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। এরা ১৯৭১সালে ফুলবাড়ী সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস পুড়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে ১৯৬৫সাল থেকে স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের জাল দলিল সৃষ্টি করে আসছে।
সহকারি কমিশনার (ভুমি) মহসিন মৃধা বলেন, জমির মালিকানা নিয়ে চলমান মিসকেস গুলো অধিকাংশ দলিল ১৯৬৪ সাল থেকে ৭০ সালের সময়ের। একই সময়ের একই তারিখে একই নাম্বারের দলিল প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। এ সকল দলিল সবই পরবর্তীতে তৈরি করা। এ কারণে এই উপজেলায় দিন দিন জমির মালিকানা নিয়ে মামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই কথা বলেন, সহকারি সেটেল্টমেন্ট অফিসার আফসার আলী। তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে এই উপজেলায় সেটেল্টমেন্ট এর কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত শেষ করা যাচ্ছেনা মালিকানা জটিলতায়। ১৯৬৪ সাল থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত ভলিউম পোড়া থাকায় ওই সময়ের দলিল নিয়ে একই জমির একাধিক ব্যক্তি মালিকানা দাবি করছে। যার ফলে সেটেল্টমেন্ট এর আপত্তি কেস শেষ হচ্ছেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহেতেশাম রেজা বলেন, থানায় জব্দকৃত জাল দলিল ও দলিল তৈরির জাল ষ্ট্যাম্পসহ সিলমোহরগুলো দেখে চমকে ওঠতে হয়েছে। গোপনে কি ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে আসছে আটক ঐ ব্যক্তিরা। এরা রাষ্ট্রের বড় শত্রু। এদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দন্ড বিধিতে মামলা করার জন্য থানার ওসি কে বলা হয়েছে। এই চক্রের সাথে আরও কারা জড়িত সেগুলোও খুঁজে বের করা হবে।