বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
ভূঞাপুরে যমুনা কেড়ে নিল ঘরবাড়ি: জমিজমা হারিয়ে দিশেহারা পরিবার
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল থেকে: বর্ষার শুরুতেই যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে অর্জুনা ও গাবসারা ইউনিয়নের ১২টি গ্রামে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৮০০ পরিবার। এসব পরিবারের সাহায্যে এখনো এগিয়ে আসেনি কোন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন।
জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিগত এক সপ্তাহে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের ১২টি গ্রমে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর, চন্দনী, বিহারী, ফলদা পাড়া, ভূঞাপাড়া ও ছোট নলছিয়া পাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছে। ফসলি জমি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৪৫টি পরিবার। অর্জুনা ইউনিয়নের রামাইল, শুশুয়া, অর্জুনা, গোবিন্দপুর, বাসুদেবকোল, জগত্পুড়া গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছে। ফসলি জমি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৫০টি পরিবার। গোবিন্দপুর ও রামাইলে ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে গোবিন্দপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতল ভবন, গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হওয়ার পথে চরাঞ্চলের প্রাচীন ব্যবসা কেন্দ্র গোবিন্দপুর হাট। সরকারি ও বেসরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যে এগিয়ে না আসায় অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছে।
গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের সাত্তার মিঞা (৬০) বলেন, “যমুনার ভাঙনে জমিজমা, ঘরবাড়ি সবই হারিয়েছি। অন্যের জমিতে আছি। সামনে ঈদ। সবাই আনন্দ করবে অথচ আমাদের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি।”
অর্জুনা ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী মোল্লা বলেন, “ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দপুর হাট চোখের সামনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভেঙে গেছে পশু চিকিৎসা কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, গোবিন্দপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতল ভবনসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার অনুরোধ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, “ভাঙনকবলিত গাবসারা ইউনিয়নের ৩৪৫টি ও অর্জুনা ইউনিয়নের ৪৫০টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা পেয়েছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল বলেন, “ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট জিআর চেয়েছি। আশা করছি ঈদের আগেই বরাদ্দ পাব।” এটি পেলেই ক্ষতিগ্রস্থদের কিছুটা হলেও সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে বলে আমি আশা করি।