বাংলাদেশরাজনীতিসর্বশেষ নিউজ
ফুলবাড়ীতে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীরা হাটে-বাজারে প্রচারনায় ব্যস্ত
মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আগামী ৩১ মার্চ ৭টি ইউনিয়নের পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে মাঠে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়েছেন।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটানিং কর্মকর্তাগণ ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্ধ দেন। প্রার্থীরা তাদের ভোটযুদ্ধের প্রতীক পেয়ে হাটে-বাজারে, বাড়ী-বাড়ী প্রচারনায় মাঠে নেমে পড়েছেন।অনেকে পছন্দের প্রতীক পেয়ে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন, এমন খবরও পাওয়া গেছে। সর্বত্র ছিল উৎসবের পরিবেশ।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় প্রতীক নির্ধারিত থাকায় অনেক আগে থেকেই তাদের পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার তৈরী করে রেখেছিলো। আবার প্রতীক পাওয়ার পরে অনেকে দৌড়েছেন ছাপাখানায়। কত দ্রুত পোস্টার পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে। উপজেলা শহরের ছাপাখানা গুলোতেও ছিল প্রচুর চাপ। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গতকাল প্রতীক বরাদ্দ হতেই ইউনিয়ন পরিষদ এলাকাগুলোতে প্রচার-প্রচারণার মাত্রা এত বেড়ে গেছে, যে মনে হচ্ছে কোনো উৎসব এসেছে। প্রার্থী ও তার লোকজন ভোটারদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করছেন। বুকে বুক লাগিয়ে, হাতে হাত দিয়ে তারা ভোট দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন। অনেকে আবার মসজিদে গিয়ে দোয়া চাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে অবস্থিত হাটে-বাজারে পোস্টার লাগানোর হিড়িক পড়ে গেছে। সুতো টাঙিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে হাজারো পোস্টার।
দলীয় প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করেছেন প্রচারণার কৌশল। বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ীদের ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের সুবিধা- অসুবিধার কথা শুনেছেন। অন্যদিকে কথা বলেছেন এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ২৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন । এর মধ্যে ৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন এখন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২২ জন প্রার্থী। আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিক নিয়ে ৭জন, বিএনপির ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে ৬জন ও ৯জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ৯জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৬জন নিয়েছেন আনারস ১জন ঘোড়া ও ২জন মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
১নংএলুয়াড়ী ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ মঞ্জু রায় চৌধুরী (নৌকা), বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ নবিউল ইসলাম (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রেদওয়ানুর রহমান (আনারস)।
২নং আলাদীপুর ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন সরকার (নৌকা), ২০ দলীয় জোটের (জামায়াত) সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মওলানা হাবিবুর রহমান (মোটরসাইকেল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ বেলাল উদ্দিন (আনারস)।
৩নং কাজিহাল ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মানিক রতন (নৌকা), বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ আশরাফুল (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আবুল হোসেন (আনারস)।
৪নং বেতদীঘি ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে উপাধ্যক্ষ শাহ্ মোঃ আব্দুল ক্দ্দুস (নৌকা), বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ মেজবাউল আলম (ধানের শীষ) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ লিয়াকত আলী (আনারস)।
৫নং খয়েরবাড়ী ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ আবু তাহের মন্ডল (নৌকা), বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন চৌধুরী (ধানের শীষ) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মনজুরুল হক (আনারস)।
৬নং দৌলতপুর খয়েরবাড়ী ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ আব্দুল আজিজ মন্ডল (নৌকা), বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ মাহফুজুর রহমান (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সাইফুল ইসলাম (ঘোড়া)।
৭নং শিবনগর ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ হারুনুর রশীদ (নৌকা), বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রভাষক মোঃ মেহেদী হাসান সাজু (ধানের শীষ), আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মামুনুর রহমান চৌধুরী বিপ্লব(মোটরসাইকেল) ও আওয়ামীগের অপর বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম মন্টু (আনারস)।
এছাড়া সাধারন সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরা পেয়েছেন আপেল, ক্রিকেট ব্যাট, ঘুড়ি, টিউবয়েল, পানির পাম্প, ফুটবল, ফুলের টপ, ভ্যানগাড়ী, মোরগ, লাটিম ও তালা।
সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরা পেয়েছেন কলম, ক্যামেরা, তালগাছ, জিরাফ, বই, বক মাইক ও হেলিকাপ্টার। প্রর্থীগণ মার্কা নিয়েই তারা প্রচারনায় নেমে পড়েছেন।