বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: হাজার হাজার একর জমির ফসল পানির নিচে
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল থেকে, নিউজরুমবিডি.কম: গত কয়েক দিনের উজানের পাহাড়ী ঢল ও অবিরাম বর্ষণের কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার পানি বাড়তে থাকায় উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আবারো অবনতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ১৩সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬২সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আবারো অবনতি হওয়ায় এখন হাজার হাজার একর জমির ফসল পানির নিচে রয়েছে। এদিকে খাদ্য-শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় সংকট দেখা দেয়া দিয়েছে বন্যাকবলিত এলাকায়।
জানা গেছে, প্রায় দু’সপ্তাহ যাবৎ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যমুনা নদীর পানি আবার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সকল গ্রামে নতুন করে পানি উঠতে শুরু করেছে। চরম দুর্ভোগে পড়া এ অঞ্চলের মানুষগুলো ধীরে ধীরে নিজ বাসস্থানে ফিরতে শুরু করলেও পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার বাড়ি থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শুরু করেছে। ফলে বার বার বাড়ি ঘর ছাড়ার কারণে তাদের ভোগান্তি এখন চরমে। এদিকে বন্যায় উপজেলায় ৩৭টি বিদ্যালয়ে স্কুলে পানি ওঠায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতি আবারো অবনতি হওয়ায় উপজেলার চরাঞ্চল ছাড়াও ফলদা ইউনিয়নের মাইজবাড়ি, ঝনঝনিয়া, ঢেপাকান্দি, আগতেরিল্যা, ফলদা, ধুবলিয়া, পাছতেরিল্যা, মমিনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়ায় হাজার হাজার একর জমির আউশ এবং আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার বন্যায় জমির আবাদী ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
আগতেরিল্যা গ্রামের বর্গাচাষী বাদল মিয়া জানান, তিনি সারা বছর খাওয়ার সিদ্ধ ধান বিক্রি করে ৬বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছে। এখন সব ধান বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মাইজবাড়ি গ্রামের কৃষক মো. মঙ্গল শেখ জানান, তিনি এবার ৫০শতাংশ জমিতে ধানের চারা লাগিয়েছে, কিন্তু বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জমির ধান একেবারে তলিয়ে গেছে। যদি পানি দু’একদিনের মধ্যে না কমে তাহলে ধানগাছ পানির নিচে থাকার কারণে পঁচে যাবে। এদিকে কর্ম না থাকায় বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে দিন চালাচ্ছে অনেকেই। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার আর বিশুদ্ধ পানির সংকট। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরণের পানিবাহিত রোগ।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের জন্য ত্রাণ হিসেবে ২০টন চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আরো ৪০টন চালের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। পেলে বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে। প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। তার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন ঔষধ বিতরণ করছে।