ক্যাম্পাসবাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
বিরল ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা
জেড.আই জহির, বিরল (দিনাজপুর) : বিরল ডিগ্রী কলেজে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট বাধ্যতামুলক কোচিং ফি আদায় করা হলেও শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। উপজেলার ১০টি কলেজের মধ্যে অষ্টম স্থানে প্রাচীনতম এই বিরল ডিগ্রী কলেজ। পাসের হার ৪৮.৮৯ ভাগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিরল ডিগ্রী কলেজে পড়ুয়া ছাত্রদের অনেক অভিভাবক বলেন, ফরম পুরনের সময় পরীক্ষার আগে বিশেষ ক্লাশ এবং মডেল টেস্ট পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হাসান অভিভাবকদের সহযোগিতা চেয়ে পত্র প্রদান করেন তাঁদের (অভিভাবক)। পত্রে মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলে কিংবা ফলাফল খারাপ করলে বোর্ড প্রদত্ত ‘প্রবেশ পত্র’ প্রদান সংক্রান্ত জটিলতা হতে পারে মর্মে হুমকি দেন।
অধ্যক্ষের পত্র পেয়ে নিরুপায় হয়ে অভিভাবকরাও সন্তানের মঙ্গলার্ধে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ১,৫০০ টাকা করে প্রতি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হাসান। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোচিংয়ের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও পরীক্ষার্থীদের কাঙ্খিত ফলাফল প্রদানে ব্যর্থ হন অধ্যক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিস্মিত ও হতাশ অভিভাকরা জানান, কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় ও ব্যর্থতার দায় নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হাসানের পদত্যাগ অত্যন্ত জরুরী। কেননা তিনি বিশেষ ক্লাশ (কোচিং) এর নামে অর্থ আদায় করে তা পরীক্ষার্থীদের ভালোর জন্য নয়, নিজে অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে বহিরাগত (সেতাবগঞ্জ কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মুরাদ হোসেন) শিক্ষক দিয়ে দায়সারা বিশেষ ক্লাস করেছেন।
কলেজ সুত্রে জানা গেছে, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় ২২৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১০ জন পাশ করেছে। এদের মধ্যে মানবিক বিভাগে ১৪৯ জনের মধ্যে ৬৬ জন, বিজ্ঞান বিভাগে ৩০ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪৭ জনের মধ্যে ৩১ জন। পাশের হার ৪৮.৮৯ ভাগ। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ইংরেজি বিষয়ে ফেল করেছে বলে সুত্রটি জানায়।
উপজেলার ১০টি কলেজের মধ্যে প্রাচীনতম বিরল ডিগ্রী কলেজ এবার পিছিয়ে অষ্টমস্থানে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হিসেবে অধ্যক্ষ আবু হাসান পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা বাধ্যতামুলক আদায় করেছেন বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। অভিভাবকরা ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ জানতে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এদিকে প্রথম স্থানে রয়েছে ধুকুরঝাড়ী কলেজ। পাশের হার ৬২.৫৮ ভাগ। এছাড়া বিরল মহিলা ডিগ্রী কলেজের পাসের হার ৬২.২০, বিজোড়া স্কুল এন্ড কলেজে পাশের হার ৬১.১১, বোর্ডহাট মহাবিদ্যালয়ে পাশের হার ৫৭.৮৯, মাঈনুল হাসান ডিগ্রী কলেজে পাশের হার ৫৫.৮৫, জগতপুর কলেজে পাশের হার ৫১.৬১, কাঞ্চন নিউ মডেল কলেজ পাশের হার ৪৫.৫৩ এবং ফরক্কাবাদ এন আই স্কুল এন্ড কলেজে পাশের হার শতকরা ৪৪.৪৪ ভাগ।
উল্লেখ্য, এর আগে ফাতেমা আক্তার নামের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর নিকট মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কাগজপত্র ফেরৎ প্রদানের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হাসান এর বিরুদ্ধে সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়। সচেতন অভিভাবকরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হাসানের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি।