বাংলাদেশরাজনীতিসর্বশেষ নিউজ
অগ্নিঝরা মার্চের শুরু
বিশেষ প্রতিবেদক, নিউজরুমবিডি.কম: আজ থেকে শুরু হলো অগ্নিঝরা মাস মার্চ। একাত্তরে এই মাসে নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনতার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
বাংলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ‘জাগো জাগো, বাঙালী জাগো’, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ মুজিব শেখ মুজিব’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালী বাঙালী’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘বীর বাঙালী অস্ত্র ধরো-সোনার বাংলা মুক্ত করো’, ‘পিন্ডি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘পাঞ্জাব না বাংলা, বাংলা-বাংলা’, ‘ভুট্টোর মুখে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ এমন হাজারো স্লোগানে মুখরিত করে রাখতো চারদিক।
১৯৭১ সালের এই মাসেই মূলত স্বাধীনতার আন্দোলন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এদিন বেতার ভাষণে ৩ মার্চের গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করতেই আন্দোলনে সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে।
বঙ্গবন্ধু ২ ও ৩ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানে সর্বাত্মক হরতালের ডাক দেন এবং ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধু এসময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিনা চ্যালেঞ্জে আমি কোন কিছুই ছাড়ব না। ছয় দফার প্রশ্নে আপোস করব না। দুই থেকে পাঁচ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ২টা পর্যন্ত হরতাল চলবে। সাতই মার্চ রেসকোর্স ময়দান থেকে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।’
৭ মার্চ ইতিহাসের অবিস্মরণীয় এক দিন। এইদিনে বঙ্গবন্ধুর বজ্র কন্ঠে উচ্চারিত হয়, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ বাঙালিদের মনে স্বাধীনতার তীব্র আকাঙ্খা তৈরি করে। আর বাঙালির স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করতেই ইতিহাসের কালো রাত নেমে আসে পাকিস্তানি শাসকদের কাছ থেকে। পাক হানাদার বাহিনীর ভারি অস্ত্র, কামান নিয়ে ‘অপারেশন সার্চলাইট’র নামে এ দেশের ছাত্র-জনতাসহ নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে এ রাতেই। আর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাঙালির ইতিহাসে স্মরণীয় মাসটির প্রথম দিনে সকল শহীদ বীরসেনানী ও আত্মত্যাগকারী মুক্তিকামী সকল জনতাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে নিউজরুমবিডি.কম পরিবার।