বাংলাদেশরাজনীতিসর্বশেষ নিউজ
হরিণাকুন্ডু পৌর নির্বাচনে কে পাচ্ছেন নৌকার টিকিট?
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন -২০২০ এ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুর সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভিন্নভিন্ন মতে ভিন্নভিন্ন অঙ্গীকারে বিভিন্ন কৌশলে নয়টি ওয়ার্ডে ভোটের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকলের একটাই লক্ষ কিভাবে জয়ের মালা ছিনিয়ে নেওয়া যায়। এছাড়াও সরকারদলীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের একাধিক সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় আগাম নির্বাচনী মাঠ গরম করতে বিভিন্ন পথ অবলম্বন করছেন। যেমন নির্বাচনকে অংশগ্রহনের ক্ষেত্রে দলীয় টিকিট পাওয়ার আশায় প্রার্থীরা স্ব-স্ব দলের উপজেলা পর্যায়ের নেতা থেকে শুরুকরে জেলা ও কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক নেতাদের সমর্থন পেতে কাজ করে যচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, হাট বাজার চায়ের ষ্টলসহ বিভিন্ন স্থানে একটাই আলোচনা- কে পাচ্ছেন মেয়র পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন তথা নৌকা প্রতিক। নিজেদের অবস্থান ও প্রার্থীতা শক্ত জানান দিতে এবং পরিচিতি তুলে ধরতে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভোটার প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রাখাসহ মতবিনিময় ও মোটরসাইকেল শোডাউন হরসামেশায় দেখা যাচ্ছে। এছাড়া কোন কোন প্রার্থী পৌর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়, ওয়ার্ডে পথসভা সহ উঠান বৈঠক করে নিজেদের কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা ও সু-সংগঠিত কর চলেছে প্রতিনিয়ত।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ নূর-উল্লাহ জানান, আগামী নভেম্বর মাসে তফসিল ঘোষনার পর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এর নির্দেশনায় ইতমধ্যে সকল ধরনের ত্রুটিমূক্ত আগাম প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মোট ভোটার ১৭ হাজার ২৯৬ জন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর তৃতীয় শ্রেণির এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আট হাজার ১৭৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহিনুর রহমান রিন্টু। জানা যায়, পৌরসভায় সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে তরুণরা এগিয়ে রয়েছেন। গত ২ বার নির্বাচনে মেয়র পদটি দখলে রেখেছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী। পৌরসভা কেন্দ্রীক রাজনিতির গুরুত্ব দেওয়ায় আওয়ামীলীগ দোষমূক্ত ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিতে পারে বলে জানাগেছে।
এদিকে সকল বিষয় মাথায় রেখে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম (টিপু মল্লিক) জানান, দলীয় মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হবেন তিনি । তিনি আরো জানান, হরিণাকুন্ডু পৌরসভাকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করে পৌরবাসীর সহায়তায় মাদক, সন্ত্রাসমুক্ত ও দুর্ণীতিমুক্ত, আধুনিক মডেল পৌরসভা বিনীর্মাণে কাজ করে যাবেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ ফারুক হোসেন জানান দলীয় মনোনয়ন (নৌকা প্রতিক)পেলে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে মেয়র হিসেবে নয়, একজন সাধারণ সেবক হিসেবে পৌরবাসীর পাশে থেকে শ্রমজীবী, মেহনতি খেটে খওয়া মানুষদের সথে নিয়ে সন্ত্রাস, মাদক ও নারী নির্যাতন মূক্ত পৌরসভা গড়বো।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ আবু সাঈদ (রুনু) জানান দলীয় মনোনয়ন পেলে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হলে পৌরবাসীকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চাওয়া সামনে রেখে উন্নয়নমূখী পৌরসভা গড়ে তুলবো, পৌরবাসী আমাকে আশ্বাস দিয়ে বলেছে “পরিবর্তন দরকার “একঘেয়েমী আর ভাল লাগেনা, জয় আমাদের নিশ্চিত।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক তাইজাল হোসেন বলেন, গত দু’বারের পরাজিত প্রার্থী পৌর বিএনপি’র আহবায়ক জিন্নাতুল হক খানকে পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চুড়ান্ত করেছে তার দল । বিএনপি নির্বাচনে গেলে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান জিন্নাতুল হক খান।
এদিকে অপর আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বাবু সঞ্জয় কুমার রায় চৌধূরী বলেন সকল প্রার্থী অনেক বলেছেন, অনেক বলতে চাইনা জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় কাজ করে যেতে চাই , অতীতেও দিবারাত্রী পৌরবাসীর সুখ দূঃখ্যে পাশে ছিলাম ভবিষ্যতেও পাশে থাকবো দ্বিতীয় শ্রেণীর পৌরসভা বি-নির্মাণে সকল কর্মকান্ড অব্যাহত রখবো।
নির্বাচন বিষয়ে হরিণাকুন্ডু উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার বলেন, পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমান কর্মকান্ড বিবেচনা করা হবে।এক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, জনপ্রিয়, সৎ ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীর নাম সুপারিশ করে কেন্দ্রে প্রস্তাব করা হবে। পুনরায় মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র শাহিনুর রহমান পরপর দুইবার নির্বাচিত হয়ে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি করে এবারও সন্ত্রাস, মাদক ও ক্ষূধামূক্ত পৌরসভা বি-নির্মাণে দলীয় মনোনয়নের পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি শতভাগ আশাবাদী বলে দাবী করেন।
তথ্য মতে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা জানুয়ারীর মধ্যেই ভোট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তবে করনা দুর্যোগের কারণে পরিস্থীতি অনুযায়ী বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।