বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

ঝিনাইদহের অনিল দাসের ৯০ বছর বয়সেও জোটেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড

onil dasজাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ : এক সময় যিনি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গায়ের জোরে বড় বড় গাছের ডাল ও গাছের গুড়ি চলা করে খড়ি তৈরি করে দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করতেন। সেই অনিল কুমার দাস আজ বয়সের ভারে নূজ্য। ৯০ বছর বয়সে তিনি ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারেন না। বিয়ের পর দুই কন্যা সন্তান চলে গেছেন ভারতে।

এখন দেখার মত কেউ নেই তার। স্ত্রীকে নিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১নং সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ছোটভাটপাড়া গ্রামের ছোট্ট একটি কুড়ে ঘরে বসবাস করেন অনিল দাস। চলতে পথে এই বয়স্ক ব্যক্তি বললেন আমার একটা বয়স্ক কার্ড করে দাও না বাবা, আর কত বয়স হলে আমি বয়স্ক ভাতা পাবো ? সবাই শুধু কথা দেয় কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।

বৃদ্ধ অনিল কুমার দাস জানান, একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য কত জন প্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, অনেকে কথা দিয়েছে কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেবার কথা বলে দু’বছর আগে তার এলাকার এক জনপ্রতিনিধি ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় তাকে কার্ড করে দেয়া হয়নি। প্রকৃত বয়স্কদের কার্ড দেবার সরকারি নিয়ম থাকলেও অনিল এখনো সেই নিয়মের মধ্যে পড়েনি। ৯০ বছর বয়সেও জোটেনি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড। নিরুপায় হয়ে আজ তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে বেড়াচ্ছেন।

অনিল কুমার দাস কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, অনেক দিন না খেয়ে থাকতে হয় তাদের। ছোটভাটপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, আমরা আগের চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে অনিলের জন্য একটি কার্ড করে দেবার কথা বলেছি। সবাই বলে, করে দিব। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই বয়স্ক মানুষটাকে কেউ একটা কার্ড করে দিতে পারলো না।
ছোট ভাটপাড়া গ্রামের কাদের মেম্বর জানালেন, আমি নতুন মেম্বর হয়েছি। অনিলের বিষয়টি আসলে খুবই দুঃখ জনক। তবে এবার বয়স্ক ভাতার কার্ড দেবার সুযোগ আসলে অবশ্যই আমি অনিল কুমার দাসকে কার্ডের ব্যবস্থা করে দিব।

এ ব্যাপারে ১ নং সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াস রহমান মিঠু জানান, ২ বছর পর পর একটি ইউনিয়নের ১৬ থেকে ১৮ টি বয়স্ক ভাতার কার্ড আসে। কিন্তু বয়স্ক ভাতা নেবার মত লোক থাকে অনেক বেশি। এই বিশাল চাহিদার ভিতর দিয়ে সীমিত সাধ্য দিয়ে সবকিছু পূরণ করা সম্ভব হয় না। তবে আমি তাকে কার্ড করে দেবার জন্য চেষ্টা করবো।

Related Articles

Close