বিনোদন
মম’র জন্মদিনে চয়নিকা চৌধুরীর ভালবাসা
নিউজরুমবিডিঃ সু অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম’র জন্মদিন। লাক্স সুন্দরী হিসেবে পর্দায় যাত্রা শুরুর কারণে প্রথমেই অভিনয় করেছেন হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র দারুচিনির দ্বীপে। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করে বেশ প্রশংসিতও হয়েছিলেন তিনি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। একে একে অভিনয় করেছেন বিজ্ঞাপনচিত্র, নটক এবং বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে। নিজের মেধা ও দক্ষতার মাধ্যমে মিডিয়ায় কনিজের একটি অবস্থানও করে নিয়েছেন তিনি। এখনও কাজ করে যাচ্ছেন সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই। আজ এই সু অভিনেত্রীর জন্মদিন। তিনি ভাসছেন কলিগ, ফ্যান ফলোয়ার ও কাছের মানুষদের শুভেচ্ছায়। সবার মতো খ্যাতিমান নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীও তাকে জানিয়েছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং মমকে ভালবাসা জানিয়েছেন তার ফেইসবুক আইডিতে মমকে একটি দীর্ঘ পোষ্টের মাধ্যমে। তার লেখাটি নিচে হুবহু তুলে দেয়া হলো।
“আমি কারোর সুখের দিনে খবর নিতে না পারলেও, দুখের সময় বা খারাপ সময়ে পাশে থাকার চেষ্টা করি। এটা আমার মায়ের কাছ থেকেই আমি শিখেছি।আমার মা বলতেন,”মানুষের ক্রাইসিস পিরিয়ডে সবার আগে যেও,দেখানোর জন্য না,মন থেকে যেও।”
মেয়েটির সাথে আমার প্রথম কাজ ২০০৮ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নীশিথে নাটক দিয়ে।কালিয়াকৈর এ আমরা এই কাজটি যখন করি পরদিন ওর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ পরীক্ষা।অনেকদিন থেকেই ওর সাথে আমার ব্যট এ বল এ মিলছিল না।
নীশিথে নাটকে আরও অভিনয় করেছিলেন,মাহফুজ আহমেদ আর রিচি।নিশীথে আমার প্রথম ১০ টা কাজের একটা।
সেই থেকে পথ চলা।
এই মেয়েটি আমার সেকেন্ড হাইয়েস্ট ফিমেইল অভিনয় শিল্পী।
আমার করা অনেক ভালো কাজের সাথী সে।
মনে আছে একবার স্বর্ণমায়া নামে একটা নাটক দেখে আমি অনেক কেঁদেছিলাম।তৌকির ভাইর ডিরেক্টশন ছিল সেই নাটক।
আমি সেইদিন যেমন মুগ্ধ হয়েছিলাম,আজও মনিটর এ, প্যানেলে,টিভিস্ক্রিনে মুগ্ধ হই তার অভিনয় দেখে।
২০১৫ সালের শেষের দিকে তার সাথে আমার একটা ছোট্ট মনমালিন্য হয়।আমি তো চুপচাপ।খুব আপসেট আমি।কিন্ত এই দারুণ মেয়েটি কিছুদিন পর নির্দ্বিধায় বল্লো,” দিদি,আমার মাথার ঠিক ছিলোনা।প্লিজ,আমাকে মাফ করে দিও।ভুল করেছি।”
মাত্র ১৫ দিন পর আমরা আবার ফরিদপুর গেলাম।আমাদের এখন পর্যন্ত সেই পথ চলা আছে।
একবার আমার একটা সিরিয়াল নিয়ে ঝামেলা হল।আমাকে শিল্পী সাবস্টিটিউট নিতে হবে।প্যারালাল শিল্পী এই অভিনয় শিল্পী ছাড়া আর কাউকেই মাথায় আসছেনা।আমার ফুলটিম, প্রডিওসার সবাই খুব বিপদে আর চিন্তায় পড়লো।
আমি বললাম,”চিন্তা করনা।”
আমি নিজে ওকে সব বললাম।সব শুনে তখনি ওকে করে দিল।
এই মানুষটা বুঝে হোক,না বুঝে হোক,জেনে হোক,না জেনে হোক একজন পরিচালককে বিপদমুক্ত করলো।আর ব্যাক্তি মম আমার সম্মান বাঁচালো।
তার যখন একটা ক্রাইসিস পিরিয়ড যাচ্ছিল, সবকিছু সে শেয়ার করত আমার সাথে ছোট বোনের মত।
আমি তাকে শুধু বলতাম,” ধৈর্যই ধর্ম।”.
কখনও কখনো সে হু হু করে আমাকে জড়িয়ে কাঁদতো।
মেয়েটি দারুণ অভিনয় করে সবাই জানে।
কিন্ত অনেক প্রফেশনাল সে।কাজের প্রতি ১০০% ভালোবাসা।অনেক সিনসিয়ার।
প্রথম যেদিন মুগ্ধ হতাম, কাল পর্য়ন্ত এখনও মুগ্ধ হয়ে তার অভিনয় দেখি আর মাঝে মাঝে চোখের জল ফেলি।
এত্ত সুন্দর অভিনয় মানুষ কী করে করে!!!
এই মেয়েটির জীবন সংগী একজন মেধাবী আর জনপ্রিয় পরিচালক শিহাব শাহীন। তার ছায়ায় মেয়েটি আনন্দ আর ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকুক এই প্রার্থনা। কারণ, সে ভালোবাসার কাংগাল।আরো প্রার্থনা করি,তার সন্তান উদ্ভাস এর যেন বিয়ে দেখতে পারে,নাতির ঘরে পুতি যেন দেখতে পারে সে।
এই চমৎকার মেয়েটি আজ এই সুন্দর পৃথিবীতে জন্মেছিল।
শুভ জন্মদিন মম।
হুম.. জাকিয়া বারী মম।
অভিনন্দন তোমার মাকে,জন্ম দেবার জন্য।
অনেক সুস্থ আর সুন্দর থেকো।
অনেক প্রয়োজন তোমার মত একজন পড়াশোনা জানা আর্টিস্টকে।অভিনয় ভালো জানলেই শিল্পী হয় না।প্রয়োজন শিক্ষা,ভদ্রতাবোধ,আর মমতা।
অনেক ভালোথেকো তুমি।
অনেক ভালোবাসি তোমাকে।
জীবন আনন্দময় হোক,
হাসিতে খুশিতে ভরে থাকুক সারাটা সময়।
“সদা থাকো আনন্দে,সংসারে নির্ভয়ে..”
ভালোবাসা ♥ তোমার জন্য মম।
নির্মাতা
চয়নিকা চৌধুরী ”
চয়নিকা চৌধুরীর ফেইসবুক আইডি থেকে সংগৃহীত।