সর্বশেষ নিউজ

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী আজ

নিউজরুমবিডি.কম: বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী আজ শনিবার। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৈতৃক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল জাতির পিতার সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে অন্যতম এক অগ্রদূত। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি মূল্যবান পরামর্শ দিতেন ও সহযোগিতা করতেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেনঅ দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘তিনি সবসময় অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সাথে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে নির্মমভাবে শহিদ হন।’

বঙ্গমাতার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার আদর্শ ও দৃষ্টান্ত যুগে যুগে বাঙালি নারীর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’ এই মহান নারীর জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে প্রত্যাশা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে তারা ধারণা পাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বামী, পুত্র, পুত্রবধূ ও নিকট আত্মীয়-স্বজনসহ ঘাতকদের হাতে তিনিও নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেন, যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন,‘এ মহিয়সী নারী ছিলেন সহজ-সরল নিরহঙ্কারী। স্বামী একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মতো তিনি স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পরে দেশ গঠনে তার অসাধারণ ভূমিকার কারণে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কারণে স্বামীর কারাবরণকালীন উত্তাল দিনগুলোতে হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে একদিকে তিনি স্বামীর কারামুক্তিসহ তার অবর্তমানে প্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগ পরিচালনায় অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে সংসার, সন্তানদের লালন-পালন, শিক্ষাদান, বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস যুগিয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামকে সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলনে শেখ ফজিলাতুন নেছা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি থেকেও এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশ ও জাতির জন্য তার অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে জাতি তাকে যথার্থই ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে।’

বঙ্গমাতার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তার রুহের মাগফিরাতও কামনা করেন।

Related Articles

Close