বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

ঝিনাইদহের পাট বীজের বাজার এখন অনিবন্ধিতদের দখলে

jute seedজাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের পাট চাষীরা জমিতে পাট বীজ বোনার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু পাট বীজের বাজার চলে গেছে অনিবন্ধিত বীজ ব্যবসায়ীদের দখলে। নিবন্ধন নিয়েও অনিবন্ধিত বীজ ব্যবসায়ীদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। ইচ্ছেমত দামে পাট বীজ বিক্রি করছে দোকানিরা। কৃষকরা বীজ কিনে প্র্রতারণার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শৈলকুপার হাট ফাজিলপুর গ্রামের পাট চাষী সেলিম হোসেন মন্ডল, আব্দুল বারি মিয়া জানান, এখন পাট বীজ জমিতে বোনার ভরা মৌসুম। প্রতি বছরই বিভিন্ন আবাদের মৌসুমকে সামনে রেখে বাজারের অনিবন্ধিত বীজের দোকানগুলোতে দেদারছে বীজ বিক্রি হয়ে থাকে। এমনকি মুদি দোকানেও বীজ বিক্রি করা হয়।
কোনো বীজে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আছে, আর কোনটির অনুমোদন নেই তা দেখে বোঝার উপায় নেই। ফলে বীজ কিনে মাঝে মধ্যেই কৃষকরা প্র্রতারিত হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছে মতো দামে বীজ বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ করেন। তারা আরও জানান, গত সপ্তাহে যে বীজ প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ২৮০-২৮৫ টাকা বিক্রি হয়েছে এখন সেই বীজ ৬০০-৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঝিনাইদহ কৃষি উন্নয়ন কপোর্রেশন সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ভার.) মো. সফিউদ্দিন সবুজ জানান, জেলার ৬টি উপজেলায় বিএডিসির নিবন্ধিত বীজ ডিলারের সংখ্যা ৭৮টি। যা সদর উপজেলায় ১১ জন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৬ জন, কোটচাঁদপুর উপজেলায় ৭ জন, মহেশপুর উপজেলায় ১৯জন, শৈলকুপা উপজেলায় ১৭ জন এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ১৭ জন নিবন্ধনকৃত বীজ ডিলার রয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরে বেশ কয়েকজন ডিলারের জন্য আবেদন করেছেন। যার সংখ্যা ৮৫/৯০ জন হতে পারে বলে তিনি জনান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামে এমনকি গ্রামের হাট বাজারে বৈধ-অবৈধ গড়ে উঠা সার কীটনাশকের দোকানগুলোতেও অবাধে পাট বীজ বিক্রি হচ্ছে। জেলার ৬টি উপজেলায় এমন অনিবন্ধিত বীজ বিক্রেতার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও অধিক বলে জানা গেছে।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাদিখালি গ্রামের চাষী জাহিদুর রহমান, ইসরাফিল হোসেন জানান, গ্রামের মুদি দোকানে পাট বীজ বিক্রি হচ্ছে। এখান থেকে বীজ কিনে জমিতে সঠিক সময় বোনার পরও চারা গজায়নি। আবার পাট বীজ কিনে জমিতে বুনতে হচ্ছে। বীজ মনিটরিং কমিটির বিশেষ নজর এদিকে দেয়া দরকার বলে তারা মনে করেন।

একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বর্তমানে কৃষি সেবায়ন, কৃষাণ, এনএসসি নবীন, মহারাষ্ট্র হালগরু এবং চাকা, হাংগ্রীর কাবেরি, চক্র, খুশি কৃষাণ, বিএডিসির পাট বীজসহ ৯-১০ প্রকার বীজ বিক্রি হয়ে থাকে। বিষয়টির দিকে বীজ মনিটরিং কমিটির নজর দেয়া দরকার বলে ব্যবসায়ীরা মনে করেন।
এ বিষয়ে জেলা বীজ প্রত্যায়ন অফিসার কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, বীজ মনিটরিং এর বিষয়ে আন্তরিক। কোনো স্থানে বীজ কিনে কৃষকরা প্রতরিত হচ্ছে, প্রতারিত হয়েছে এমন সংবাদ, অভিযোগ পেলে নিয়মানুযায়ী দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। এছাড়া মনিটরি ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।

ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর এবং বীজ মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব শাহ মোহাম্মাদ আকরামুল হক জানান, আমরা অনুমোদিত ডিলারদের নিকট হতে বীজ কিনে ব্যবহার করার জন্য কৃষদের সচেতন করছি।

Related Articles

Close