ক্যাম্পাসজাতীয়বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকীতে নানা আয়োজন
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৮৮০ সালের এই দিনে সিরাজগঞ্জের ধানগড়া পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম হাজী শরাফত আলী খাঁ ও মায়ের নাম মজিরন বিবি। মওলানা ভাসানী রাজনীতির আলোকবর্তিকা হাতে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে এর আলো ছড়িয়েছেন। তিনি সারাজীবন সাধারণ মেহনতি মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। সবসময় ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। ক্ষমতার কাছে থাকলেও ক্ষমতার মোহ তাকে কখনো আবিষ্ট করতে পারেনি। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধুও তাকে শ্রদ্ধা করতেন। জীবনের বড় অংশই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও অত্যন্ত সাদাসিধে মানুষ। তার সাধারণ জীবনযাপন এ দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রতিফলন। শোষণ ও বঞ্চনাহীন, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য মওলানা ভাসানী আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
মওলানা ভাসানীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন ও স্মরণসভা করবে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন। এ উপলক্ষে শনিবার সকালে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সকাল ৯.১৫ মিনিটে মাওলানা ভাসানীর মাজার ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন-এর নেতৃত্বে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পুস্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারত করা হয়। এরপর মাওলানা ভাসানী স্মৃতিসৌধ ব্যবস্থাপনা কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যসোসিয়েশন, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, ভাসানী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসস্থ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও পৃথক পৃথক ভাবে পুস্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারত করা হয়। বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া সকাল ১০ টায় ক্যাম্পাসস্থ দরবার হলে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাওলানা ভাসানী স্মৃতিসৌধ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে আলোচনা সভা ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লং মার্চে নেতৃত্ব দেন মওলানা ভাসানী। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে।