বাংলাদেশ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

55555555মোঃবদরুল আলম বিপুল,বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল ১৫-০৮-২০১৬ তারিখ সোমবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতিকৃিততে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম।

পরে একেএকে ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমান, অনুষদীয় ডিন, বিভাগীয় প্রধান, হলের প্রভোস্টগণ, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় ।

এরপর বেলা ৩টা সময় গাহি সাম্যের গান মঞ্চে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহিত উল আল্ম।তিনি তার বক্তব্যে বলেন‘ বঙ্গবন্ধু আমাদের চেতনাকে ক্রমে ক্রমে শক্তিমান করে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর আগেও অনেক খ্যাতিমান নেতা ছিলেন কিন্তু কেউই বাংলাদেশের প্রয়োজন উপলব্ধি করতে পারেননি। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা। কারন পাকিস্তানের সৃষ্টি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আর বাংলাদেশের সৃষ্টি ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানী চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাসীরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বাঙালি চেতনাকে ধ্বংস করা যাবে। কিন্তু তাদের সেই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে হত্যা করা গেলেও তাঁর চেতনা ও আদর্শকে মুছে ফেলা কখনো সম্ভব হয়নি আর কখনো সম্ভব হবেও না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন ধর্মীয় চেতনার নামে ধর্মীয় ঔপনিবেশিকতার বিস্তার ঘটানো হচ্ছে। আমাদের মাতৃভাষাকে ছোট ভেবে হীনমন্যতায় ভোগার কোন কারন নেই। আমাদের সংস্কৃতি ও চেতনা থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমান। বিশেষ অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী জনাব মাহবুবুল হক শাকিল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এতো বেশি লেখা-লেখি হয়েছে যা বিশ্বের কোন রাষ্ট্রপতি বা নেতাকে নিয়ে হয়নি। এদেশের নবীন/প্রবীণ এমন কোন লেখক নেই যিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোন লেখা লেখেননি। এপর্যন্ত প্রকাশিত সকল লেখা নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ করলে তা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মহাকাব্যে পরিণত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর এমন কোন ইরেজার আবিস্কার হয়নি যা মহাকালের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারে।’ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও জাতীয় শোক দিবস উদ্যাপন কমিটি-২০১৬ এর আহ্বায়ক প্রফেসর ড. আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: মাহবুব হোসেন ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: হাবিবুর রহমান।

এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি সোহেল রানা ও মুহাম্মদ রুহুল আমিন। প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাব্বির আহমেদ এবং আপেল মাহমুদ বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও জাতীয় শোক দিবস উদ্যাপন কমিটি-২০১৬ এর সদস্য-সচিব সিদ্ধার্থ দে।

আলোচকবৃন্দ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জীবন ও কর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মিলাদ ও দোয়া মাহ্ফিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুক্তভোজ অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে গাহি সাম্যের গান মঞ্চের সামনে সন্ধা সাতটায় আলোকচিত্র প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়।

Tags

Related Articles

Close