বিনোদন

কোটি ভিউয়ের গান হারিয়ে গেলেও হাজারের ঘরে বাস করা এই গানটি আজীবন বেঁচে থাকবে

eso

“ফিরতে বাড়ি হোকনা দেরি, চলো একটু নাহয় ভিজলো শাড়ি, চলো!” লাইন দুটি আউড়াতে আউড়াতে বলি বাংলা গানও এমন গানে নাহয় ভিজুক, তবে একটু না, খুব বেশি বেশি। 

রাফিউজ্জামান রাফিঃ বর্তমানে গান শোনার প্রধান মাধ্যম যেখানে ইউটিউব সেখানে ভিউ যেন একটি বিরাট ব্যাপার। কোনো কোনো গান ইউটিউবে কোটি কোটি ভিউ পেয়ে হয়ে যায় ভাইরাল ও কোটিপতি। ফলে সেগুলো পেয়ে যায় জনপ্রিয় গানের খেতাব, ঘুরতে থাকে মানুষের মুখে মুখে। সেই সাথে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। আবার কোনো গান না পেরোতে পারে হাজারের ঘর আর না হতে পারে ভাইরাল। ফলে গানগুলো নিরীহর মতো আড়ালেই পড়ে থাকে। এগুলো না পায় জনপ্রিয় গানের খেতাব আর না হয় আলোচনা বা সমালোচনার শিকার।

আজ ইউটিউব ঘেটে গান শুনতে গিয়ে তেমনই একটি গানের সন্ধান পেলাম। গানটির নাম এসো। গানটি শুনতে গিয়ে যেটা টের পেলাম তা হলো কানে বেশ আরাম বোধ হচ্ছে। আর সেই সাথে গানটি থেকে বেশ কাব্যের ঘ্রাণও বেরোচ্ছে। গানের কথাগুলোর মাঝে কবিতার বেশ আধিপত্য রয়েছে। দুজন নারী পুরুষের একে অন্যের প্রতি দৈনন্দিন জীবন একসাথে কাটানোর কি দারুন একটা সুন্দর সহজ আহবান রয়েছে গানটিতে। আমি, তুমির মেলায় হারিয়ে যাওয়া গীতিকারকে যখন সাহিত্যিকের মর্যাদা দিতে সাহিত্যিকরা নারাজ তখন এমন কাব্যময় কথার গান যেন গীতিকবিতাকে সাহিত্যের মর্যাদা দিতে প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম।

আমি গানের ভিউয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১৫০০০ আর রিলিজ ডেটের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ২৮ নভেম্বর। আর আজ হচ্ছে ২৮ ডিসেম্বর। এত সুন্দর গানের এত কম ভিউ! এমন একটা প্রশ্ন আমার জাগার কথা থাকলেও জাগলো না। তার বদলে আমার স্নায়ুতে যে কথাটি উদয় হলো তা হচ্ছে কোটি কোটি ভিউয়ের গান দুই দিন পর মরে গেলেও ১৫ হাজার মানুষের ১৫ হাজার মনে এই গানটি আজীবন বেঁচে থাকবে। অর্থাৎ একটি সৃষ্টি কর্ম কোটি কোটি দর্শক পেয়েও যেখানে কাঙ্খিত স্থায়ীত্বের অভাবে ভুগে শেষ পর্যন্ত নিরবে হারিয়ে যায় সেখানে এই গানটি যেন হাজরের ঘরে থেকেও ১৫ হাজার মনে অমরত্বের ঠিকানা পেয়ে গিয়েছে।

এবার আসি গানের কারিগরদের কথায়। গানটি গেয়েছেন দুজন আরজে। তারা হলেন আরজে শারমিন ও আরজে রেহান। আরজে শারমিন আরজে হিসেবে জনপ্রিয় হলেও রেহান এরই মধ্যে আরজের পাশাপাশি গায়ক হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছেন তার বাজে স্বভাব গানের মাধ্যমে। আর এখানেই লুকিয়ে আছে রেহানের আরেকটি গুণ৷ তা হলো তার লেখনী। আমি মনে করি বাজে স্বভাব সবাইকে কাছে টানার মূল কারণ গানের কথাগুলো। আর এই কথাগুলো রেহানেরই লেখা। রেহান এসো গানেও তার লেখনীর মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। শারমিনের গায়কীতেও বেশ ভাল লাগার ব্যাপার রয়েছে। আর মিউজিক ভিডিওর কথা বলতে গেলে বলতে হবে গল্পটিতে একদিকে ফুটে উঠেছে সুস্থ সুন্দর গান নিয়ে চলার প্রয়োজনীয়তা এবং বাস্তব পরিস্থিতি। পাশাপাশি ভাঙাভাঙির এই বছরে এসো যেনো টানপোড়ন ভুলে যৌথ যত্নে ভালবাসাটাকে বাচিয়ে রাখার, শেষ পর্যন্ত ভালবেসে যাবার আহবান জানিয়েছে।

সবশেষে এসো সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে এসোর “ফিরতে বাড়ি হোকনা দেরি, চলো একটু নাহয় ভিজলো শাড়ি, চলো!” লাইন দুটি আউড়াতে আউড়াতে বলি বাংলা গানও এমন গানে নাহয় ভিজুক, তবে একটু না, খুব বেশি বেশি।

Tags

Related Articles

Close