অন্যান্য

শুধু সেক্স হয়ে গেলো বলো স্যুইসাইড করো না। প্লিজ। জীবন এতো খারাপ না।

লেখক
লেখক

পুষ্পিতা আনন্দিতাঃ চূড়ান্ত পর্যায়ের মানসিক ডিপ্রেসনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া, বারবার সুইসাইড এটেম্পট করা এক ভার্সিটির ছোটবোন সকালে জানতে চাইলো “আপু ভাল মানুষ চেনার উপায় কি?” সকাল থেকে এটাই ভাবছি ভাল মানুষ চেনার উপায় কি? কেউ আসলে একেবারে ভাল হয়না। ভাল মন্দ মিলিয়ে মানুষ। দেখা যাচ্ছে খুব দানবীর, মানবিক, মিশুক, সুন্দর কথা বলা একটা লোক পার্টনার হিসেবে ভাল না। সেই একই মানুষ হয়তো অন্য কারও পার্টনার হিসেবে খুবই ভাল প্রমাণিত হলো। তাই বাইরে থেকে কে কতোটা ভাল তা বোঝার থেকে দরকারি হলো সেই মানুষটা আমার জন্য কতোটা ভাল তা বুঝতে চেষ্টা করা, সে ভালোবাসে কিনা বুঝতে চেষ্টা করা।

এইটা বোঝা হয়তো খুব কঠিন আবার সহজও। আমার কেন যেন মনে হয় ছোট ছোট বিষয় দিয়েই মানুষকে চেনা যায়। কিন্তু যদি দেখেন যা ভেবেছিলেন যা আশা করেছিলেন সব ভুল। মানুষটা ভুল। তাহলে কি জীবন শেষ হয়ে যাবে? মরে যেতে হবে? আমি জানি যারা সুইসাইডের কথা ভাবে কোনো যুক্তি তাদের মনকে শান্ত করতে পারে না। বারবার আঘাত পাওয়া মানুষ সবসময় ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। ‘কাউকে দরকার নেই, তুমি নিজের মতো থাকো’ এই কথা সবাইকে বললে হয়না। সবাই একা থাকতে পারে না। সবার মানসিক গঠন এক না। যেমন আমি… অল্প পরিচিত কিছু লোকের সাথে টোটো করে ঘুরে বেড়ানোর থেকে আমার কাছে খুব কাছের বান্ধবীর সাথে ক’মিনিট কথা বলতে অনেক সুখ। আমার মানুষ দরকার….. কাছের মানুষ, পরিবার, বন্ধু। সম্পর্ক নিয়ে সবার ভাবনা একই রকম নয়।

কিন্তু ওইযে বললাম যদি ভুল করে বসেন তবে? মরে যাওয়া আসলেই সমাধান না। সব কাজ থেকে ছুটি নিয়ে ঘরে বসে থাকাও না। ব্যস্ত হয়ে যান আর অপেক্ষা করেন। একটা সময় পরে সব ঠিক হয়ে যায়। মানুষ চেনার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় সমস্যা মানুষের তা হলো সে নিজে। হয়তো প্রথম থেকেই সমস্যাগুলা সামনে আসে, মানুষ বুঝতেও পারে কিন্তু পাত্তা দেয়না। আবেগ দিয়ে ভাবে। ভাবে সব ঠিক হয়ে যাবে। ভালবেসে সব চেইঞ্জ করে ফেলব। আমি পারব এই ভাবনাটাই সবথেকে ভুল। মানুষ খুব কমই চেইঞ্জ হয়। এইটা আপনার জীবন, কোন প্রজেক্ট না। যদি পারবেন তবেই সেই ঝুঁকিটা নিবেন। কিন্তু যদি না পারেন? না পারার ধাক্কা সহ্য করতে পারবেন তো? যদি না পারেন থেমে যান। মানুষ যুক্তিরে অগ্রাহ্য করে, সমস্যাগুলা ইগনোর করে পরে দেখা যায় সেই সমস্যা তারে গিলে ফেলেছে। নিজেরে বাঁচানোর বেস্ট ওয়ে ঠিক সময়ে থামতে জানা।

আর আমার ওই পরিচিতা মেয়েটার মতো আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সুইসাইড করতে চাওয়া মেয়েদের প্রধান কষ্টের কারণ থাকে শরীর। সেক্স করে ফেলেছি… এখন এজীবন রেখে আমি কি করব? সেক্স হলে তাতে কেউ নষ্ট হয়ে যায়না। তুমি মরে যাবে কারণ তুমি সেক্স করে ফেলেছ এই ধারণা থেকে বের হও। সে তো মরছে না। বরং খুশি হও তোমাকে ভালোবাসেনি, সেক্সের জন্য প্রতারনা করে রিলেশন করেছে এমন একজনকে তুমি সময় থাকতে চিনতে পারলে বলে। বাংলাদেশের মেয়েরা রাস্তায় বের হলে হাজার পুরুষ চোখ দিয়ে চাটে, মনে মনে ধর্ষণের ইচ্ছে পোষণ করে, ভিড়ের সুযোগে গায়ে হাত দেয়, তোমার কতো পরিচিত মানুষ হয়তো তোমার কথা ভেবে মাস্টারবেট করে তুমি হয়তো জানো ও না, তাতে তোমার কি কিছু হয়? তাহলে ভুল মানুষকে ভালবেসে শারীরিক সম্পর্কের জন্য মরতে হবে কেন?

এবার একটু অন্য কথা। শরীর কিছু না, শরীর একটা ট্যাবু, সেক্স হলে কেউ শেষ হয়না ইত্যাদি এসব কথা অনেক বলা হয়েছে এইবার একটু তোমার কথা বলি। তুমি মেয়ে যে এখনও এভাবে ভাবতে পার না। তুমি বোকা অমুক তমুত এসব আমি বলব না। তুমি তোমার মতো। তোমার যদি মনে হয় সেক্স তোমার কাছে জীবন মরনের বিষয়( যদিও কিছু না তবু তুমি যেহেতু ভাবো) তাই তুমি সিদ্ধান্তে আসো কোনো সম্পর্কে ঢোকার আগে। কারণ মানুষ নিজেই নিজেকে সবথেকে ভাল চেনে। সবসময় সবথেকে খারাপ পরিণতি ভেবে নাও। যাকে প্রেমিক ভাবছ, বিশ্বাস করছ সে হয়তো ভালবাসে না। শুধু সেক্সই চায়। দুদিন পর তোমাকেই চরিত্র খারাপ এসব বলে চলে যাবে। তোমার সাথে এমন হলে তুমি মেনে নিতে পারবে তো? যদি পারো তাহলে যাও…. সুন্দর সময় কাটাও তুমিও। আর না পারলে প্লিজ শারিরীক সম্পর্কে যেও না।অপেক্ষা করো। কিন্তু চিন্তা ভাবনা না করে এরপর শুধু সেক্স হয়ে গেলো বলো স্যুইসাইড করো না। প্লিজ। জীবন এতো খারাপ না।

ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত

Tags

Related Articles

Close