জাতীয়বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

সখীপুরের ভাতগড়ায় মা-মেয়েকে বিবস্ত্র

প্রতিবাদে গ্রামবাসীর মানববন্ধন

সালেকীন সিফাত (সখীপুর) টাংগাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সখীপুরে দিনদুপুরে মা-মেয়েকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ও বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার সকালে বড়চওনা-ধৈনাজানি সড়কের ইন্দ্রারজানী এলাকায় এ মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাতগড়া গ্রামের বাসিন্দা (মুরুব্বি) ডিএম শামছুল হক। বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষকলীগের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আ. মালেক, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি রিপন তালুকদার, মোন্তাজনগর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল হক, জামাল হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধনে আশপাশে বিভিন্ন গ্রামের কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়।

উল্লেখ্য,  মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভাতগড়া গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে আবদুল বারেক ও সোরহাব মিয়াসহ তাঁদের অনুসারীরা ওই গ্রামের ফাহিমা খাতুনের বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ফাহিমা খাতুন ও তাঁর মেয়েকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি করে। প্রধান হামলাকারী আবদুল বারেক ফাহিমা খাতুনের সাবেক স্বামী। ফাহিমা ও মেয়েটি বর্তমানে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বুধবার বিকেলে ফাহিমা খাতুন মুঠোফোনে  বলেন, আমার স্বামী আবদুল বারেক ১২ বছর মালয়েশিয়া কাটিয়েছেন। তিন বছর আগে সিলেটে আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে। এক বছর আগে আমাকে তালাক দেয়। আমার বড় ছেলে ফরিদ হোসেন তিন বছর ধরে সৌদিআরব আছে। আরেক ছেলে শাহাদাত হোসেন ৩ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা দেবে। আমার বড় মেয়ে বিলকিছকে বিয়ে দিয়েছি। আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ের সম্মতিতে আমি আমার স্বামীর ভিটেতেই থাকি।

শাহাদত হোসেন বলেন, আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় আমরা আমার মায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি।  মঙ্গলবার আমার বাবা ও চাচারা এক সঙ্গে দলবেধে লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে আমাকে বেধে ফেলে। তাঁরা আমার মা ও বোনকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা করে। আমার মা ও বড়বোন ঘর থেকে বের না হওয়ায় তাঁরা তাঁদের বিবস্ত্র করে।স্থানীয় বাসিন্দা জেলা কৃষকলীগের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আ. মালেক বলেন, দিনদুপুরে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায় স্থানীয় লোকজন তা প্রত্যক্ষ করে ক্ষুব্ধ হয়। ফলে স্থানীয়রা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার দাবি করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

মামলার বিবরণে বিবস্ত্র ও শ্লীলতাহানির বিষয়টি লেখা হয়নি কেন জানতে চাইলে বাদী ফাহিমা খাতুন বলেন,‘আমরা অশিক্ষিত মানুষ। মামলা তো আর আমরা লিখিনি। লিখেছে পুলিশ। মামলায় কী লিখছে তা আমার জানা নেই। আমি তো পুলিশকে সব বলেছি, তাঁরা না লিখলে আমার কী দোষ। এছাড়াও ঘটনা প্রকাশ্যে ও দিনদুপুরে হওয়ায় গ্রামবাসীরা তা দেখেছেও ও ভিডিওও করেছে।

সখীপুর থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এস.আই) বদিউজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় ওইদিনই ফাহিমা খাতুন বাদী হয়ে সাবেক স্বামী ও স্বামীর ভাইদেরসহ আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার বাদী ঘটনার বিবরণে বিবস্ত্র ও শ্লীলতাহানির কথা উল্লেখ করেনি। ওই রাতেই প্রধান আসামি আবদুল বারেককে গ্রেপ্তার করে বুধবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হামলাকারী বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Tags

Related Articles

Close