বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

বিরলে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন? সাত বছরের শিশুকে ধর্ষনের অভিযোগে ১২ বছরের শিশু ছেলে গ্রেফতার

বিরল থানাজেড.আই জহির, বিরল (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের বিরলে ১ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে ৭ম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক কিশোর ছাত্রকে পুলিশ থানা হাজতে আটকে রাখে। ঐ কিশোরের অভিভাবকের নিকট হতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে গ্রাম্য মাতবররা প্রায় ৩২ ঘন্টা পর থানা থেকে কিশোর ছাত্রকে ছাড়িয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।

পুলিশ কিশোর ছাত্রকে আটক করে দীর্ঘক্ষন থানায় আটক রাখার পর ছেড়ে দেওয়ায় এলাকাবাসীর মনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেরই মন্তব্য পুলিশকে টাকা দিলেই সব কিছুই করা সম্ভব। ধর্ষনের মৌখিক অভিযোগের সত্যতা যাচাই না করে কেনই বা পুলিশ ওই কিশোর ছাত্রকে আটক করল, আবার দীর্ঘক্ষন থানা হাজতে আটকিয়ে রাখার পর ছেড়েই বা দিল কেন ?

ঘটনার পরের দিন ১৮ জুলাই মঙ্গলবার রাতে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষনের শিকার ঐ শিশুকে ভর্তি করে তার পরিবার। বিরল থানার পুলিশ খবর পেয়ে ধর্ষনের অপরাধে অভিযুক্ত লাইসুর রহমানকে (১২) মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে বাড়ি থেকে আটক করে। ধর্ষনের চেষ্টার অপরাধে ১২ বছরের ঐ কিশোর ছাত্রকে দীর্ঘক্ষন থানা হাজতে আটক রাখে পুলিশ।

পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুন ও সাবেক চেয়ারম্যান সহিদুর রহমান সাইদুর, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজানুর ইসলামসহ স্থানীয় ভাবে শালিসী বৈঠকে অভিযুক্ত ঐ কিশোরের অভিভাবকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা (গোপন রাখার শর্তে) আদায় করে।

অভিযুক্ত ঐ কিশোরের বড় চাচা মনসুর আলী বলেন, তাঁর ভাতিজা রামপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেনীতে পড়ে। বিদ্যালয়ে এখন দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ঘটনার দিন ১৭ জুলাই সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাঁর (ছেলে) শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। ষড়যন্ত্র করে তাঁর ভাতিজাকে ফাঁসিয়েছে এলাকার কতিপয় ব্যাক্তি। ভিকটিম ওই শিশু এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ও গাইনী বিভাগের ২নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাবেক চেয়ারম্যান সহিদুর রহমান সাইদুর ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজানুর ইসলামসহ স্থানীয় কয়েকজনে শালিসী বৈঠকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। জরিমানার ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ভিকটিমের অভিভাবককে দিয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টাকা। বাকী ২০ হাজার টাকা বিরল থানার পুলিশ ও শালিসদার ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার পর আটক ওই ছেলেকে বুধবার রাতে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মজিদ স্থানীয়ভাবে আপোষ-মিমাংসার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতেই ওই ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয় ঠিকই। কিন্তু স্থানীয়ভাবে আপোষ-মিমাংসা করায় ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Tags

Related Articles

Close