সর্বশেষ নিউজ

১৩ বছরের কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্তা: অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয়ের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে মা

tanটাঙ্গাইল প্রতিনিধি, নিউজরুমবিডি.কম: টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলায় ভাদুরীর চর গ্রামে এক গরীব দিনমজুরের ১৩বছর বয়সী কিশোরী কন্যা তার গর্ভে ৭মাসের সন্তান নিয়ে আশ্রয়হীন অবস্থায় পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। থানায় মামলা করেওে সন্তানের জনক একই গ্রামের লম্পট গোলাম মোস্তফার দাপটে কিশোরী এবং তার পরিবার বিচারের আশায় বিভিন্ন মহলে গিয়েও ঠাঁই পাচ্ছেনা।

সোমবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে কিশোরীর পিতা মো. হাসমত আলী বলেন, আমি একজন গরিব দিনমজুর। আমার দুটি কন্যা সন্তান ও দুটি ছেলে সন্তান আছে। এত বড় সংসার পরিচালনার মত আর্থিক সংগতি আমার নেই। যে কারণে আমি আমার বড় কন্যা সন্তান ১৩বছর বয়সী হাসি খাতুনকে অভাবের কারণে একই গ্রামের মো. আব্দুল বারীকে এর বাড়িতে কাজ করার জন্য দেই। কিন্তু সেখানে কাজ করার সময় সে আব্দুল বারীকের বন্ধু মো. গোলাম মোস্তফা (৪৫) এর লোলুপ দৃষ্টিতে পড়ে। আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিত দৈহিক মেলামেশা শুরু করে। এভাবে কিছু দিন বিভিন্ন দিন বিভিন্ন স্থানে নিয়ে আমার মেয়ের সাথে অবৈধ মেলামেশা করে। যারফলে আমার মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ে।

আমার মেয়ে অন্তঃসত্তা হওয়ার খবর পেয়েই আমি গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করে এর বিচার চাই। তখন সে বলে আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করবো। যার ফলে প্রথম দিকে আমি কাউকে কিছু জানাই নাই। কিন্তু সে এভাবে কালক্ষেপণ করে। পরবর্তীতে সে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে না বলে জানায়। এঘটনা জানার পর আমি আমার পরিবারের সাথে কথা বলে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেই। সেই মোতাবেক গত ১৮/০৭/১৫ ইং তারিথে আমার মেয়ে বাদী হয়ে মো. গোলাম মোস্তফার (৪৫) পিতা মৃত. ইসমাইল হোসেন, সাং ভাদুরীর চর, থানা- গোপালপুর, জেলা- টাঙ্গাইল এর বিরুদ্ধে গোপালপুর থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৯ (১) ধারায় রুজু করে মামলা দায়ের করা হয়।

এসময় মো. হাসমত আলী আরো জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার পরেও দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলার আসামীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আসামী মোস্তফা দাপটের সাথে এলাকা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, এ পর্যন্ত পুলিশ মাত্র একবার আমার বাড়িতে আসে মামলার তথ্যের জন্য এবং আমার নিকট হতে মামলা মোটর সাইকেলের তেল খরচ ও চা নাস্তা বাবদ ১০০০/ (এক হাজার টাকা) নিয়ে আসে। তারপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মামলার কোন অগ্রগতি হয়নি। অপরদিকে আসামী এবং গ্রামের প্রভাবশালী লোকেরা মামলা তুলে নিতে নেয়ার জন্য আমাকে এবং আমার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি এবং আমার মেয়ে মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় কিছুদিন পূর্বে আমাদেরকে হত্যার হুমকিও দেয়। তারপরেও ন্যায় বিচারের আশায় আমরা মামলা তুলতে না চাওয়ায় মামলার আসামী মো. গোলাম মোস্তফা তার মেয়ে মোছা. মোর্শেদা খাতুনকে দিয়ে যারা আমার মামলা পরিচালনায় সহায়তা করে আসছিলো তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করে। এতে করে আমরা চরম অনিশ্চয়তার মাঝে আছি। এদিকে আমার মেয়ে বর্তমানে প্রায় ৭মাসের অন্তঃসত্তা। এ অবস্থায় আমার মেয়ের বর্তমানে যে খাবার ও চিকিৎসা দরকার তা বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা। অপরদিকে মেয়ের পেটের বাচ্চা নিয়ে আমি কি করবো তা ভেবে পাচ্ছিনা। এমতাবস্থায় আমার আত্মহত্যা ছাড়া অন্য কোন উপায় চোখে পড়ছেনা।

Related Articles

Close