বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
নির্মাণের ৫ মাসেই নষ্ট হয়ে গেছে দেড় কোটি টাকার রাস্তা!
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গ্রামীন সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণের ৫ মাসের মাথায় নষ্ট হয়ে গেছে। নিম্নমানের ইট বালি ও পিচ দেওয়ার কারণে অধিকাংশ স্থানে গর্তসহ রাস্তা ধ্বসে ও দেবে গেছে। গ্রামীন সড়ক সংস্কারে অনিয়মের ঘটনায় এলাকাবাসীর মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের কয়েকদিন পর বিভিন্ন স্থান গর্ত হয়ে দেবে গেছে। অনেক স্থান উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ রাস্তায় কাজ করার সময় ঠিকাদার নতুন ইট ও বালি দেননি। রাস্তার পুরাতন ইট তুলে তার ওপরেই পিচ ঢেলে রোলার টেনেছেন। যার কারণে রাস্তা দেবে সরকারের সব টাকা গচ্ছা গেছে। অনেক স্থানে পিচ উঠে রাস্তা ভেঙে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ বাবরা রোড মিলগেট থেকে রাখালগাছি ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার কার্পেটিং (মেরামত) এর কাজটি করেছেন ঝিনাইদহের একজন ঠিকাদার। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারী থেকে কাজটি শুরু করার কথা থাকলেও ঠিকাদার গত ২৬ মে থেকে গ্রামীন সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় রাস্তার কার্পেটিং এর কাজটি শুরু করেন। ১ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যায়ে রাস্তা মেরামতের কয়েকদিন পরই তা উঠে যেতে থাকে। পর্যায়ক্রমে প্রায় ৫ মাসে রাস্তার অধিকাংশ স্থান নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থান ভেঙে গেছে। আবার কোথাও রাস্তার ওপর থেকে পিচ উঠে গেছে। এ রাস্তার বাবরা, মনোহরপুর, মোল্ল কোয়া গ্রামের অধিকাংশ অংশ বর্তমানে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
মনোহরপুর বাজারের একাধিক ব্যক্তি জানান, ঠিকাদার রাস্তায় কোনও নতুন ইট ও বালি দেয়নি। পুরাতন ইট তুলে সেটাই আবার রাস্তা রোলার দিয়ে ডলে দিয়ে গেছেন। এর কয়েকদিন পর থেকেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে যায় ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোথাও উঁচু-নিচু হয়ে যায়। বর্তমানে এ রাস্তা গাড়ি চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার পাশে মাছ ধরতে আসা মনোহরপুর গ্রামের প্রান্তিক চাষী আবদুর রহমান জানান, রাস্তা সম্পর্কে কিছু বললে তো আমাদের দোষ হবে। সরকার তো রাস্তা তৈরি করতে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু ঠিকাদাররা তো ফাঁকি দিচ্ছেন। তারা নিম্নমানের ইট বালি পিচ দিয়ে রাস্তা করেছেন। যার কারণে কয়েকদিন পর সব ভেঙে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষক, আমাদের সমস্যা সব সময়ই বিরাজমান। এই ভাঙা ও উঁচু-নিচু রাস্তা দিয়ে আমাদের গাড়ি ঠেলে কৃষিপণ্য নিয়ে যেতে হবে। তবে ঠিকাদারের পাশেই যেন দাড়ালেন কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সানাউল হক। মোবাইল ফোনে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোথাও পিচ উঠেনি। তবে রাস্তায় কাজ করার পর বৃষ্টি হয়েছিল এবং তখন বেশ কিছু ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য কিছুকিছু জায়গা বসে গেছে। আমি রাস্তাটি ভিটিজ করে দেখবো। রাস্তা নির্মাণের কয়েক মাসের মাথায় তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট নির্মাণকারী প্রতিষ্টান বা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের কোনও জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, ‘অফিসে আসেন, সাক্ষাতে কথা বলবো।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা জানান, বিষয়টি আমার অজানা। সরেজমিন দেখে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবো।