জাতীয়বাংলাদেশবিনোদনসর্বশেষ নিউজ

না ফেরার দেশে নায়ক রাজ রাজ্জাক

razzak-1বিনোদন প্রতিবেদক, নিউজরুমবিডি : সত্তরের দশকে এই বাংলায় যখন উর্দু ও হিন্দি সিনেমার দাপটে মার খাচ্ছিলো বাংলা সিনেমা।তখন একটি হাত এসে ধরেছিলো এই মার খাওয়া চলচিত্রের শিল্পেরহাত।হাতটি ছিলো একজন উদ্বাস্তুর হাত।দুস্থেের হাততো উদ্বাস্তুই ধরবে। এটাই স্বাভাবিক।তার পরতো ইতিহাস।

এই উদ্বস্তুর হাত ধরেই বাংলা চলচিত্র স্থানকরে নেয় বিশ্বের মধ্যে চতুর্থতম স্থান আর হাতটিও কখনো রোমান্টিক প্রেমিকের প্রেমিকার গালে আদরমাখা হাত, কখনো প্রেমিকাকে পাগল করে দেয়া ডাকাতপ্রেমিকের হাত, কখনো অন্যায়ের প্রতিবাদী তরুনের হাত, কখনো অস্ত্র হাতে আলোর মিছিলের যোদ্ধার হাত, কখনো ছুটির ঘন্টা বাজানো দপ্তরীর হাত, কখনো প্রেমিকাকে ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’ গান শোনানো প্রেমিকের টেলিফোনে রাখা হাত, আবার কখনো পাগলা রাজার হাত হতে হতে হয়ে ওঠে নায়ক রাজের হাত। তিনি আর কেউ নন,তিনি বাংলা চলচিত্রের মুকুটহীন সম্রাট, নায়ক রাজ রাজ্জাক।যিনি দীর্ঘ সময় দাপটের সাথে শাসন করেছেন বাংলা চলচিত্র।

গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা তেরো মিনিটে আমদের এই রাজা তার রাজত্ব ছেড়ে সবাইকে ফাকি দিয়ে চলে গিয়েছেন না ফেরার দেশে।গতকাল বিকেলে তিনি অসুস্থবোধ করলেতার পরিবারের সদস্যগন তৎক্ষনাত তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালে নিয়ে গেলে ছয়টা তেরো মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক অচেতন অবেস্থায় থাকানায়ক রাজকে মৃত ঘোষনা করেন।

আর এই ঘোষনার মধ্য দিয়ে চলচিত্র পাড়ায়, চলপ্রেমীদের মনে নেমে আসে শোকের ছায়া।প্রয়াত এই অভিনেতা জন্মগ্রহণ করেন কলকাতা টালিগন্জে। সপ্তম শ্রেনীতে পড়াবস্থায় তার স্কুলে মঞ্চায়িত মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে হাতেখড়ি নেন তার অভিনয় জীবনের।পরবর্তীতে কলকাতায় বাসরত অবস্থায় টিভি নাটকে অভিনয় করেন তিনি।

১৯৬৪ সালে দেশভাগের সময় পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি চলে আসেন তৎকালীন পূর্বপাকিস্থান, বর্তমান বাংলাদেশে।রুটি রোজগারের তাগিদে কলকাতার টিভি অভিনেতা এপাড়ে এসে কাজ শুরু করেন চলচিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে।এরমাঝে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় চালিয়ে যান তিনি।

এরপর তিনি পরিচিত হন প্রতিভাবান পরিচালক জহির রায়হানের সাথে।তিনি জহির রায়হানের সহকারীহিসেবে কাজ করা শুরু করেন।এরপর আসে তার নায়ক হওয়ার সেই মাহেন্দ্রক্ষন।জহির রায়হান বাংলা লোককাহিনীর ওপর তার নির্মিতব্য বেহুলা চলচিত্রেরজন্য নায়ক খুজে বেড়াচ্ছিলেন। কিন্তু কেউ নায়ক হতে রাজী না।কেননা নায়ককেতো সারা সিনেমায় মৃত লক্ষিন্দর হয়ে কলাগাছের ভেলায় শুয়ে থাকতে হবে।

কাউকে না পেয়ে জহির রায়হান তার সহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাককে বললেন, ‘রাজু আপনিইআমার ছবির নায়ক’।এভাবেই নায়ক হয়ে উঠলেন নায়ক রাজ্জাক। আর জানান দিলেন, ‘রাজা আসছে’। এরপর একে একে তিনশতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেনতিনি।তার দূর্দান্ত অভিনয় দিয়ে জিতে নেন বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের মন। আর উপাধি পান নায়করাজ।গতকাল এই নায়ক রাজে মৃত্যুতে যবনিকাপাত ঘটলো কটি ইতিহাসের।

Related Articles

Close