বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

ফুলবাড়ীতে এক্স-রে রিপোর্টকে কেন্দ্র করে দুই চিকিৎসকের হাতাহাতি, থানায় অভিযোগ

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরে ফুলবাড়ীতে প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের এক্স-রে রিপোটকে কেন্দ্র করে প্যাথলজিক্যালকের মালিক সহ দুই চিকিৎসকের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফুলবাড়ী পৌর বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পল্লী চিকিৎসক সাধনা নন্দ চৌধুরী বাদী হয়ে ঐ দিন রাতে ফুলবাড়ী থানায় ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. বিপ্লব বিশ্বাস ও সরকার প্যাথলজিক্যাল এর মালিক অরুণ চন্দ্র সরকার এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পল্লী চিকিৎসক সাধনা নন্দ চৌধুরী বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারী সকালে এনামূল হক নামের এক জন রোগী বুকে ব্যথা নিয়ে তার কাছে চিকিৎসার জন্য আসে। তিনি প্রাথমিক পরীক্ষায় রোগীর হার্ড এর সমস্যা অনুভব করায়, রোগীকে এক্স-রে করার জন্য ফুলবাড়ী পৌর বাজারের সরকার প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে প্রেরণ করেন। প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে রোগীর এক্স-রে করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. বিপ্লব বিশ্বাসের দ্বারা,এক্স-রে রিপোর্ট করে রোগীকে ফেরত দেন।

ডাঃ সাধনানন্দ চৌধুরী রোগীর  এক্স-রে রিপোর্টে দেখে ডাঃ বিপ্লব বিশ্বাসের সকল রিপোটে রোগীর সব সমস্যা নরমাল বা স্বাভাবিক  বলে মন্তব্য করেছেন। এক্স-রে রিপোর্টের বিষয়টি ডাঃ সাধনানন্দ চৌধুরীর সন্দেহ দেখা দিলে, প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের এক্স-রে প্লেটটি নিয়ে শহরের প্রবীন চিকিৎসক ডাঃ এমএ কাইউয়ুম এর নিকট নিয়ে যান। ডাঃ কাইয়ুম এক্স-রে প্লেটটি দেখে ব্রনকাইটিস ও কার্ডিও ম্যাগালি লিখে দেয়, যা ডাঃ বিপ্লব বিশ্বাসের করা রিপোটের সম্পূর্ণ বিপরীত।

এই বিষয়টি নিয়ে প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের নিকট প্রতিবাদ জানালে, সরকার প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের মালিক ও ডাঃ বিপ্লব বিশ্বাস  পল­ী চিকিৎসক ডাঃ সাধনানন্দ চৌধুরীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তারা গত ৮ ফেব্রুয়ারী সোমবার সন্ধা সাড়ে ৬টায় ডাঃ সাধনানন্দ চৌধুরীর চেম্বারে এসে  সাধনানন্দ চৌধুরীকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে। এই ঘটনায় ডাঃ সাধনানন্দ চৌধুরী বাদি হয়ে প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের মালিক অরুন চন্দ্র সরকার ও ডাঃ বিপ্লব বিশ্বাস এর বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাটি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।

এই বিষয়ে ডাঃ এম এ কাইয়ুম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এক্স-রে প্লেটের রিপোর্ট অনুযায়ী রোগীটি ব্রণকাইটিজ এর সাথে কারর্ডিও মেগালি পাওয়া গেছে। যা হার্ড এর সমস্যা বুঝায়।

অপরদিকে ডা. বিপ্লব বিশ্বাস এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রেডিওলজিষ্ট বিশেষজ্ঞ নেই, তাই আমরা (মেডিকেল অফিসাররা) চোখের মাপে এই রিপোট করে থাকি। কিন্তু একজন পল­ী চিকিৎসক খারাপ মন্তব্য করার এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

এদিকে ফুলবাড়ী পৌর শহরে ৯টি প্যাথলজিক্যাল সেন্টার গড়ে উঠলেও প্যাথলজিষ্ট চিকিৎসক মাত্র ১ জন (ডাক্তার এম.এ কাইয়ুম) বাকীরা ৬ মাসের ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ নিয়ে এই সকল প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট তৈরী করছে। এতে করে সাধারণ রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এই জন্য ভুক্তভোগীরা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Tags

Related Articles

Close