uncategorizedখেলাধূলা
বাংলাওয়াশের লজ্জা এড়ালো ভারত: সিরিজ বাংলাদেশের
স্পোর্টস ডেস্ক, নিউজরুমবিডি.কম: ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল টাইগাররা দ্বিতীয় ম্যাচেই। তাই তৃতীয় ম্যাচে টাইগারভক্তদের স্বপ্ন ছিল হোয়াইটওয়াশের। কিন্তু শেষ ম্যাচে জয় ধরা দেয়নি বাংলাদেশের কাছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ধোনিবাহিনী অবশেষে সান্তনায় জয় তুলে নিয়েছে ৭৭ রানে। ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ ২-১ এ নিজেদের করে নিয়েছে ছন্দে থাকা টাইগাররা।
শুরুতেই টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যে শুরুতে ফিল্ডিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন- ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেটা পরিস্কার করেছেন তিনি। গত দুইটি ম্যাচেই বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকলেও এ ম্যাচে বৃষ্টি হানা দেয়নি। যদিও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল।
ভারতের ইনিংসের সূচনা করেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শেখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা। কিন্তু তাদের জুটি দীর্ঘায়িত হতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান। রোহিত শর্মা ২৯ রান করে টানা তৃতীয়বারের মত মুস্তাফিজের শিকার। দ্বিতীয় উইকেটে শেখর ধাওয়ান ও কোহলি ৭৫ রানের জুটি গড়েন। ২৫ রানে কোহলিকে বোল্ড করেন সাকিব। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে দ্বিতীয় ম্যাচের মত চারে ব্যাটিংয়ে আসেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথম দুই ম্যাচে সফলতা না পেলেও শেষ ম্যাচে দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন ধোনি। অবশ্য ধোনির আগেই শেখর ধাওয়ান (৭৫) ও আম্বাতি রাইডু (৪৪) সাজঘরের পথ ধরেন। ভারতের মোট সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৩১৮।
ধোনি, ধাওয়ান ও রাইডুর উইকেট তুলে নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ৩ উইকেট পেলেও ১০ ওভারে মাশরাফি দিয়েছেন ৭৬ রান। রুবেল হোসেনের ওভারগুলোও ছিলো ব্যয়বহুল। ৯ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৭৫ রান। আরাফাত সানীও ছিলেন বেশ খরুচে বোলার। তিনি ৬ ওভারে দিয়েছেন ৪২ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ৩১৯ রান। লক্ষ্যটা একটু বড় হলেও টাইগারদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে আশায় বুক বেঁধেছিল টাইগার ভক্তরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভক্তদের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি টাইগাররা।
বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় ৮ রানে। তামিম ৫ রানে আউট হন কুলকার্নির বলে। তবে দ্বিতীয় উইকেটে লিটনকে সঙ্গে নিয়ে ঝড় তুলেন সৌম্য । ৩৪ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করেন। আর তাদের জুটিতে আসে ৫২ রান। দলীয় ৬২ রানে অযথা শট খেলতে গিয়ে কুলকার্নির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন সৌম্য। তার বিদায়ের পরও প্রথম পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬৫। যা ভারতের থেকে ৪ রান বেশি।
তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিম ও লিটন ৫০ রানের জুটি গড়ে তুলেন। কিন্তু দলীয় ১১২ ও ১১৮ রানে এই দুই ব্যাটসম্যানও নিজেদের উইকেট বিলিয়ে আসেন। মুশফিক (২৪) রায়নার বলে ক্যাচ দেন ধোনির হাতে। আর লিটন (৩৪) অক্ষর পাটেলের বলে অলসভাবে শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন। তাদের বিদায়ের পর সাকিব আল হাসান দ্রুত ২০ রান তুলে সাজঘরের পথ ধরেন রায়নার বলে। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ উঠিয়ে দেন সাকিব।
ষষ্ঠ উইকেটে সাব্বির ও নাসির দ্রুত ৪৯ রান তুলে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। কিন্তু মারকুটে সাব্বিরও সিনিয়র ক্রিকেটারদের অনুসরণ করে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। সাব্বিরের ব্যাটিংয়ে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হলেও সাব্বির স্বাগতিক দর্শকদের হতাশ করেন স্টুয়ার্ট বিনির বলে বোল্ড হয়ে। আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৩ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
সাব্বির আউট হওয়ার পর পরই নিভে যায় জয়ের প্রদ্বীপ। নাসিরের ৩২ রানে শেষদিকে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র। আরাফাত সানী (১৪), মুস্তাফিজুর রহমান (৯), রুবেল হোসেন (২) রান করেন।
ভারতের সেরা বোলার সুরেশ রায়না। ৩ উইকেট নেন তিনি। এছাড়া অশ্বিন, কুলকার্নি নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট পকেটে পুরেন আম্বাতি রাইডু ও স্টুয়ার্ট বিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ৩১৭/৬ (রোহিত ২৯, ধাওয়ান ৭৫, কোহলি ২৫, ধোনি ৬৯, রাইডু ৪৪, রায়না ৩৮, বিনি ১৭*, অক্ষর ১০*; মাশরাফি ৩/৭৬, মুস্তাফিজ ২/৫৭, সাকিব ১/৩৩)
বাংলাদেশ: ৪৭ ওভারে ২৪০ (তামিম ৫, সৌম্য ৪০, লিটন ৩৪, মুশফিক ২৪, সাকিব ২০, সাব্বির ৪৩, নাসির ৩২, মাশরাফি ০, সানি ১৪*, রুবেল ২, মুস্তাফিজ ৯; রায়না ৩/৪৫, ধবল ২/৩৪, অশ্বিন ২/৩৫, রাইডু ১/৫, বিনি ১/৪১, অক্ষর ১/৪৪)
ম্যাচ সেরা: সুরেস রায়না (ভারত)
ম্যান অব দ্যা সিরিজ: মুস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ)