বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
বর্ষা মোকাবেলায় নৌকা বানাতে ব্যস্ত ভূঞাপুরের কারিগররা
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল থেকেঃ যমুনা নদীতে বাড়ছে পানি। আগাম বর্ষাকে মোকাবেলা ও প্রস্তুতি নিতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ছোট-বড় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। এছাড়াও কারিগরদের পাশাপাশি পুরনো নৌকাগুলোও মেরামতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের নৌকার মাঝিরা। এ মৌসুমে চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের একটুও দম ফেলার ফুসরত নেই। তবে সারা বছর নৌকা তৈরির কোন কাজ না থাকলেও বর্ষা মৌসুমের জন্য অপেক্ষায় থাকেন কারিগররা।
সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী, গাবসারা, অর্জুনা ও নিকরাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজার ও এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কারিগররা তাদের নিপূণ ছোঁয়ায় কেউ কেউ ছোট বড় নৌকা বানাচ্ছে। কেউ নৌকাগুলোর রঙ করতে আলকাতরা ও গাবের পানি ব্যবহার করছে। কারিগররা জানায়, এসব নৌকাগুলোতে ব্যবহার হচ্ছে- শিমুল, কাঁঠাল, মেহগনি, কালেক্টর, কড়ই, আম ও কদমসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ।
গাবাসারা এলাকার কাঠের বেপারী মো.আয়নাল বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে নৌকা তৈরির কাঠ কেনার জন্য কেউ আসে না। সে সময়টা ব্যবসা মন্দা হয়ে পড়ে। নৌকা তৈরির কারিগররাও খুব কষ্টে সময় পার করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসলে নৌকার ব্যবহার বেশী করেন চরাঞ্চলের মানুষ। চরাঞ্চলের মানুষের বর্ষা মৌসুমে একমাত্র যাতায়াতের বাহন হিসেবে নৌকাই ভরসা।
তিনি আরো জানান- ‘কারিগর অনুযায়ী প্রতিদিন ৪ থেকে ৮টি করে নৌকা তৈরি হচ্ছে। ছোট নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫’শ থেকে ৫ হাজার টাকা। একটা নৌকা তৈরির জন্য কারিগরদের পারিশ্রমিক দেয়া হয় ৭’শ থেকে ৮’শ টাকা। গোবিন্দাসীতে সপ্তাহে ররিবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। হাটের দুই দিন আমাদের নৌকা বিক্রি বেশি হয়। তাছাড়াও কারখানা থেকে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টা করে নৌকা বিক্রি হচ্ছে। কিনতে আসেন দূর-দূরান্তের বিভিন্ন এলাকার লোকজন।’
নৌকা তৈরির কারিগর মো. জয়নাল হোসেন বলেন- ‘আমরা বর্ষা মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি। কেননা বর্ষা মৌসুমের সময় আমাদের কাজের অনেক চাপ থাকে। প্রতিদিন গড়ে ২-৩ টা করে নৌকা তৈরি করতে পারি। পারিশ্রমিকও ভালো। একটা নৌকা তৈরি করলে আমরা ৭ থেকে ৮’শ টাকা করে পাই।
গাবসারা থেকে নৌকা কিনতে আসা জেলে মো. আব্দুল আলিম জানান- ‘প্রতিদিন যমুনা নদীতে বর্ষার পানি বাড়ছে। তার জন্য আমরা স্থানীয় বাজারের নৌকা তৈরির কারিগরদের কাছে গিয়ে নতুন নৌকা ক্রয় করছি। যাদের কাছে গত বছরের পুরাতন নৌকা আছে তারা এখন সেগুলো মেরামত করতে ব্যস্ত।
উপজেলার গোবিন্দাসী হাটে নৌকা কিনতে আসা নাজমুল, সোহাগ, রবিউল ও বাবুসহ বেশ কয়েকজন ক্রেতা বলেন- ‘বর্ষা মৌসুমে আমরা গোবিন্দাসী হাটে নৌকা কিনতে আসি। এখান থেকে নৌকা কিনে নিয়ে যাই। বর্ষা মৌসুমে আমরা এই নৌকা ব্যবহার করে মাছ ধরি। আবার অনেক সময় অন্যদের পারাপার করে থাকি। এখানকার নৌকাগুলো অনেক ভালো এবং মজবুত হয়।’