ক্যাম্পাসজাতীয়বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
ভোগান্তি রোধে দাবি আদায়ে রাবি শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে
শফিকুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ভোগান্তি দূর করার লক্ষে চার দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে মানববন্ধন করেছে। রোববার বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
তাদের দাবিগুলো হল : হলের ডাইনিংয়ের খাবরের মান বৃদ্ধি, বাসের ট্রিপ বাড়ানো, সপ্তাহে ছয় দিন লাইব্রেরি খোলা রাখাও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি।
মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কিংশুক কিঞ্জল বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয় যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে তা ছাত্র বান্ধব নয়। এমন অবৈধ সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিব না। কেননা রাকসু প্রতিনিধি ব্যতিত তাদের নিজস্ব সিন্ডিকেটে একক সিদ্ধান্ত কখনো শিক্ষার্থীদের মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না।’
তিনি আরো বলেন, আমরা এখানে পড়াশোনা করতে এসেছি। আমাদের ক্লাসের সঙ্গে লাইব্রেরির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু নতুন নিয়মে তারা ক্লাসের সঙ্গে লাইব্রেরিও দুই দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। যে প্রশাসন শিক্ষা লাভে ব্যাহত করছে তারা কীভাবে ছাত্রবান্ধব হয়? একজন ছাত্রেরও প্রয়োজন হলেও সপ্তাহে সাত দিন লাইব্রেরি খোলা রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের কোনোরকম মতামত না নিয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হলের ডাইনিংয়ে মিল চার্জ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু খাবারের মান পূর্বের ন্যায়ই আছে। আর রাস্তাঘাটের অবস্থাও করুণ। বিশ^বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৬৪ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার পরও রাস্তাঘাট যদি এমন হয়; তবে টাকা গেল কোথায়?
এসময় গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিব বলেন, বিশ^বিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। অথচ পুলিশ দিয়ে আমাদের বন্দি করে রাখা হচ্ছে। তাদের কাছে আমাদের জবাবদিহিতা করতে হয়। আমরা খাঁচায় বন্দি থাকতে চাই না। আমাদের স্বাধীন ভাবে বাঁচতে দিন।’
ইনফরমেশন কমিউনিকেশন ও ইঞ্জিনিয়ারিং (আই সি ই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এস এন মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, ‘প্রায়শই বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে এসে অবাধ বিচরণ করে। খেলার মাঠ থেকে শুরু করে গোটা ক্যাম্পাস যেন তাদের আখড়া। তাদের হাতে শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। এদিক থেকে আমরা হুমকির মুখে আছি। আর কিছুদিন আগে সাংবাদিক মারধরের ঘটনা ঘটল। তবুও প্রশাসন নীরব।
ইসলামের স্টাডিস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ মুন্নার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক আহমেদ, নৃবিজ্ঞানের শাহরিয়ার আলম, ফলিত গণিত বিভাগের শাহাদত হোসেন প্রমুখ। এসব দাবি না পূরণ করা হলে পরবর্তী সময়ে আরো কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, আসলে একটা নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। প্রথম দিকে একটু সমস্যা হবে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সবকিছুর তো একটা নিয়ম থাকে। শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হচ্ছে। তারা আমাদের লিখিত অভিযোগ দিবে। কিন্তু তা না করে সরাসরি আন্দোলনে গেছে। তবে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।