ক্যাম্পাসজাতীয়বাংলাদেশবিনোদনসর্বশেষ নিউজ

ঢাবি শিক্ষার্থী শরিফুলের স্বপ্নের পথচলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নিউজরুমবিডি.কম: এক যুগেরও বেশি সময়, ১৪ বছর যাবৎ তার মিডিয়াপাড়ায় আনাগোনা। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন খ্যাতনামা অভিনেতা হওয়ার। শুরুটাও অভিনয় দিয়েই।

FB_IMG_1487604104413

২০০৩ সালে টোকাই নাট্য দলের সহযোগিতায় জনপ্রিয় অভিনেতা আবুল হায়াত পরিচালিত বিটিভির ধারাবাহিক “শুকনো ফুল রঙিন ফুল” নামক ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে যাত্রা শুরু। এর পর একে একে “আলো আমার আলো”, “ধুলোজমা দিনের কথা” নাটকে অভিনয় করেন তিনি। এসময় অমিতাভ রেজা নির্মিত কয়েকটি বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন তিনি। এরই মাঝে “জুতা রহস্য” নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি যৌথ পরিচালনা করে শরিফুল। টিভি নাটকের পাশাপাশি মঞ্চ নাটকও নিয়মিত ভাবে চালিয়ে যায় শরিফুল।
২০০৪-২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর জাতীয় শিশু কিশোর প্রতিযোগিতায় চিত্রাঙ্কন, একক অভিনয়, গানে অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন শাখায় নিয়মিত ১ম স্থান অধিকার করে সুনাম অর্জন করে শরিফুল। ২০০৮-২০১১ সালে আমরা কুড়িঁ, বঙ্গবন্ধু একাডেমি, নতুন কুড়িঁ, বাংলাদেশ শিশু একডেমি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে ১ম,২য় স্থান অধিকার করে সুনাম অর্জন করে। স্বপ্ন তখন আকাশ ছোঁয়া। এত্ত এত প্রাপ্তিই ছিল তার পথ চলার অনুপ্রেরণা।
তিনি একজন সাহিত্যিকও। পিপস থিয়েটার থেকে বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে তাৎক্ষনিক কবিতা লেখা প্রতিযোগিতায় “বিদ্রোহী কণ্ঠে”নামক কবিতা লিখে ১ম স্থান অধিকার করে। ১ম শ্রেণীতে অধ্যায়রত থাকা কালিন গান ,কবিতা,গল্প লেখালেখি করতেন। ৩য় শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তার রচনা ও পরিচালনায় নাটক”একটি পতাকার জন্য”নাটক মঞ্চস্থ হয় ১ম এএসডি একটি এনজিওএর মাধ্যমে । তার পর থেকে স্কুল,কলেজ সহ বিভিন্ন জায়গায় তার রচনা ও পরিচালনায় বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক নাটক মঞ্চস্থ হতো।

FB_IMG_1487604089222

৬ষ্ঠ শ্রেণীতে থাকতে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে এমপি ফোর,হ্যান্ডি ক্যামেরা নিয়ে শর্টফিল্ম বানাতে শুরু করে। ২০০৯ সালে কয়েকটি পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল তার ওপর ডুকমেন্টারি করে। যা তার জীবনে নতুন মাত্রা সংযোগ করে।
২০১০ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ৩য় শিশু চলচ্চিত্র কর্মশালায় ইউনিসেফ থেকে শিশু সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণের সুযোগ পায় শরিফুল।
তার পর থেকে আরও আগ্রহ বেড়ে যায়। দিন যতই যেতে থাকে ততোই শর্ট ফিল্ম বানাতে থাকে আর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে পুরষ্কারও জিততে থাকে। শর্টফিল্ম বানানো যে টাকা প্রয়োজন তা দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না। নিজের পড়াশোনার খরচ সহ নিজের স্বপ্ন কে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে টিউশন এবং পত্রিকার বিজ্ঞাপন বুথে কাজ করতো সে । তার আয় দিয়ে শর্টফিল্ম বানানো আর পড়াশোনার খরচ চালতো।
২০১৪ সালে নারীদের নিয়ে শরিফুলের নির্মাণ করা “ওরা এদেশের চাবিকাঠি” ইউনিসেফ এর মিনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড এ ২য় স্থান অধিকার করে। অভিনয় ছেড়ে জোঁকে গেলেন নির্দেশনার দিকে।
২০১৫ সালে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তার কাহিনী, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায়-প্রথমবারের মত একক নাটক “স্টপ রিংটোন” প্রচারিত হয় এশিয়ান টিভিতে। শুরু হয় স্বপ্নের পথচলা।
এর পর বছর খানেকের মধ্যেই “ওক্তি আন্তা শাহি”, “যে কুড়ায় কাঁচের গুড়ো”, “লাল পায়েল” সহ অর্ধডজন একক নাটক বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে।
থেমে নেই শর্টফিল্মের কাজও। ২০১৫ সালে মুক্ত প্রাণ চলচ্চিত্র উৎসবে তার রচনা ও পরিচালনার ৩টা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হয়ে সেরা পুরষ্কার জিতে নেয়- “স্বপ্ন পাখি”, “দ্যা ইন্ডলেস স্পিরিড” এবং “নারীর চোখে দেশ। ৩য় আন্তর্জাতিক কার্টুন উৎসবে ১ম স্থান অধিকার করেছে তার রচনা ও পরিচালনার কার্টুন “দ্যা স্মল ফ্রেন্ড”। গতবছর তার নির্মিত “দ্যা হ্যান্ডস অব রোজবার” ৯ম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব, ৩য় তারেক মাসুদ চলচ্চিত্র উৎসব, স্বদেশি চলচ্চিত্র উৎসব ও মিনা এওয়ার্ড প্রাপ্ত হয়। বর্তমানে শরিফুলের নির্মিত “জয়ার জয়” ও “অন্য মানুষ” নাটক দুটি প্রচারের অপেক্ষায় আছে। শীঘ্রই তিনি পূর্ণদৈঘ্য চলচিত্র নির্মাণের কাজ শুরু করবেন।
এত্ত কিছুর পরও থেমে থাকেনি তার পড়াশুনা। মেধার সাক্ষর রেখেই তিনি পড়াশুনা করছেন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি এখানে সংগীত বিষয়ে স্নাতক পড়ছেন।

Related Articles

Close