বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
মালয়েশিয়ায় আটকে দুই পা ভেঙ্গে দেওয়ার খবরে ঝিনা্ইদহ জেলা জুড়ে তোলপাড়
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের যুবক তুহিন রেজা (২৩) কে মালয়েশিয়ায় আটকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তার দুই পা ভেঙ্গে দেওয়ার খবর বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ায় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্যাতিত যুবকের বাবা ও মাকে ঝিনাইদহ সদর থানায় ডেকে পাঠানো হয়। তাদের কাছ থেকে একটি অভিযোগ নেওয়া হয়।
তুহিন রেজার বাবা ইসলাম উদ্দীন সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান। এদিকে সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে নির্যাতিত তুহিন রেজার বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে টাকার জন্য বিদেশে আটেকে রেখে তুহিন রেজার দুই পা ভেঙ্গে দেবার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান ঝিনাইদহ সদর থানার এএসআই অশোক কুমার।
তিনি জানিয়েছেন মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তিনি সদর উপজেলার মহামায়া গ্রামে যান এবং দালালদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন। এ ঘটনার পর থেকে ৪ দালাল গাঁঢাকা দিয়েছেন।
তুহিন রেজার মা রোকেয়া খাতুন জানান, ২০১১ সালে লিবিয়া যাওয়ার জন্য এলাকার দালাল মহামায়া গ্রামের মধু, আসাদ, বেজিমারা গ্রামের মাহফুজুর রহমান ওরফে পল্টু ও তোরাব আলির কাছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তুহিন।
দুই বছর ধরে ঘোরানোর পর দালালরা জানান, লিবিয়ার আবস্থা ভাল নয়। সাড়ে ৪ লাখ টাকা হলে ইরাক বা কাতারে পাঠানো হবে। এরপর ফ্লাইটের নামে তুহিনকে দফায় দফায় ১৬ বার ঢাকায় নিয়ে রাখা হয়।
সর্বশেষ একই খরচে তুহিনকে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। মালয়েশিয়ায় পৌছানোর পর দালালচক্র তুহিনকে আটকিয়ে পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তুহিনকে দফায় দফায় নির্যাতন করে। কোন উপায়ন্ত না পেয়ে তুহিনের দরিদ্র বাবা গরু ও মাঠের জমি বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন।
এরপর তুহিনের নিকট আরো দশ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে না পারাই তিন তলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। এতে তুহিনের দুই পা ভেঙ্গে যায়।
তিনি আরো জানান, ঢাকার দালাল ফরিদপুরের শহিদুল ইসলাম ও সদর উপজেলার কুঠিদূর্গাপুর গ্রামের মতিন ওরফে মতি দালালও এ ঘটনার সাথে জড়িত।
বর্তমানে তুহিন মালেয়েশিয়ায় তার আত্মীয় চুয়াডাঙ্গার ঘোলদাড়ী গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলবারের আশ্রয়ে চিকিৎসাধিন রয়েছেন।