বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ

নদী ভাঙনের কবলে কালিহাতীর ১৪ গ্রাম

tan riverমুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল থেকে: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ১৪টি গ্রামে যমুনা ও লৌহজং নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন বাড়িঘর ভাঙছে। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় নতুন নতুন জনপদ রয়েছে ভাঙ্গনের চরম হুমকির মুখে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা মানবেতর জীবনযাপন করলেও সরকারি সাহায্য পায়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিহাতী উপজেলার পশ্চিমে দুর্গাপুর, গোহালিয়াবাড়ী, সল্লা ইউনিয়ন এবং এলেঙ্গা পৌরসভার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা ও লৌহজং নদীতে বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই উজান থেকে নেমে আসা ¯্রােতে উপজেলার বেলটিয়া, শ্যামসৈল, আলীপুর, আফজালপুর, বিনোদ লুহুরিয়া, বিয়ারা মারুয়া, কুর্শাবেনু, বেনুকুর্শা, জোকারচর, মীর হামজানি, হাতিয়া, মগড়া, টিকুরিয়াপাড়া ও বাঁশি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া প্রতিদিনই নতুন নতুন বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়ছে। হুমকির মুখে রয়েছে ১৪টি গ্রামের সহ¯্রাধিক পরিবার। নদী ভাঙনে সহায় সম্বল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে কিংবা খোলা জায়গায়। ভাঙন কবলিত নীরিহ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।

শ্যামসৈল গ্রামের ফজলুল হক (৭০) জানান, তাদের গ্রামের অনেকের বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে তারা নিঃস্ব। কেউ তাদের কোন খোঁজ পর্যন্ত নেয় নাই।

একই গ্রামের ওসমান গণি (২৮) জানান, প্রতিবছরই তারা নদী ভাঙনের শিকার হন। অনেকের থাকার জায়গা টুুকুও নেই। প্রতি বর্ষা মৌসুমেই নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকলেও নদী শাসন কিংবা ভাঙন রোধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। ব্যাপক ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কখনো কখনো জিও ব্যাগ ফেলে দায়িত্ব পালন করে থাকে, এবার তাও করছেনা। এদিকে, ভাঙনের হুমকিতে থাকা জনপদের বাসিন্দারা ভাঙন রোধে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। ভাঙনের ফলে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে কয়েকটি গ্রাম।

কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাসার উদ্দিন জানান, উপজেলায় নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সাহায্য প্রদানের জন্যে তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়া ভাঙনের শিকার কয়েকটি পরিবারের মধ্যে নগদ টাকা এবং ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন বিতরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, তিনি ভাঙন পয়েন্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে একটি প্রকল্প ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

Related Articles

Close