আরকে তুহিনঃ সারাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাদক, অস্ত্র উদ্ধার, চোরাচালান প্রতিরোধকারী জেলা হিসাবে ২ টি আইজিপি পদক পেয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার)। জাতীয় পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে তৃতীয়দিনে মঙ্গলবার ৭ জানুয়ারি আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) দেশের সর্বোচ্চ মাদক উদ্ধারকারী জেলা, দেশের সর্বোচ্চ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারকারী জেলা ও চোরাচালান প্রতিরোধকারী জেলা হিসাবে কক্সবাজার জেলা পুলিশের কর্ণধার এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার)-কে এ বিশাল সাফল্যের জন্য আলাদা ২ টি আইজিপি পদক, সনদ ও সম্মাননা তুলে দেন।
সারাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাদক, অস্ত্র উদ্ধার ও চোরাচালান প্রতিরোধকারী জেলা হিসাবে ‘খ’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন (প্রথম)-হয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ, দ্বিতীয় হয়েছে-নরসিংদী জেলা পুলিশ ও তৃতীয় হয়েছে যশোর জেলা পুলিশ।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ অবদান, দৃষ্টান্তমূলক সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম-কে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক বিপিএম (সেবা) পদক প্রদান করেন। ২০১৯ সালের জাতীয় পুলিশ সপ্তাহেও পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেনকে সর্বপ্রথম বিপিএম (সাহসিকতা) পদক এবং দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের জন্য পৃথক আরো ২টি আইজিপি পদক পান।
এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এসপি হিসাবে কক্সবাজারে যোগদানের মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে ২ টি জাতীয় পর্যায়ের পুলিশের সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন বিপিএম পদক ও ৪ টি আইজিপি পদক প্রাপ্তির বিরল সৌভাগ্য অর্জন করলেন।
অপ্রতিরোধ্য, নীতি, আদর্শে অটল এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম জম্মগ্রহন করেন বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায়। তাঁর গর্বিত পিতা মরহুম মাস্টার আবদুল কাদের হাওলাদার, মাতা অজুফা খাতুন। তাঁর বাবা ছিলেন, এলাকার একজন আদর্শ ও গুনী শিক্ষক। তাঁরা পরিবারে ৮ ভাই বোন। রেকর্ড সংখ্যক মার্ক নিয়ে ঢাকা ল্যাবর্যাটরী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইসএসসি পাশ করেছেন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃতিত্বের সাথে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করে ২৪ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিসিএস (পুলিশ) সার্ভিসে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে বিসিএস (পুলিশ) এর একজন কৃতি সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
চাকুরি জীবনের শুরুতেই এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম পুলিশ হেডকোয়ার্টারে যোগ দেন। এরপর সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসাবে ডিএমপি’তে, সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে মুন্সিগঞ্জ জেলায়, কিশোরগঞ্জ জেলায় ও ঢাকা জেলায় কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (টিআর) পদে দায়িত্বপালনকালীন সময়ে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর তিনি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পান। ২০১৮ সালের ১১মার্চ তিনি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ওয়েলফেয়ার এন্ড ফোর্স) হিসাবে বদলী হয়ে সেখানেও তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ উপ পুলিশ কমিশনার হিসাবে ডিএমপি’তে কর্মরত থাকাবস্থায় ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের পুলিশ সুপার হিসাবে নিয়োগ পান। এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেনের জন্মদিন ১৬ সেপ্টেম্বর। ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এ.বি.এম মাসুদ হোসেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করেন। তৎকালীন বিদায়ী পুলিশ সুপার ডঃ এ.কে.এম ইকবাল হোসাইন থেকে তিনি দায়িত্ব গ্রহন করেন। ২০১৪ সালে কৃতিত্বের জন্য চৌকষ, মেধাবী ও দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) বাংলাদেশ পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার আইজিপি ব্যাজ অর্জন করেন। বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, প্রখ্যাত আইনজীবী, বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক সভাপতি ও বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন কাবুল এর কন্যা ইংরেজি বিষয়ে অনার্স সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা জেনিফার মুন’কে নিজের জীবনসঙ্গীনি হিসেবে বেচে নেন ২০০৮ সালের ৩১ অক্টোবর। এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) কক্সবাজারে কর্মরত থাকাবস্থায় তাঁর শ্বশুর বরিশালের সবার প্রিয় এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন কাবুল ২০১৯ সালে ১৯ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন। এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম এবং জেনিফার মাসুদ দম্পতি ঈসা ও মুসা নামক ফুটফুটে চোখজুড়ানো দু’জমজ সন্তানের জনক ও জননী।