বাংলাদেশ

ঝিনাইদহে আসলেই কি মেডিকেল কলেজ স্থাপন হবে ?

jhenaidah medicle collegeজাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ মেডিকেল কলেজ স্থপানের সব কিছুই বিদ্যমান ঝিনাইদহে। মেডিকেল কলেজের সহায়ক দুইটি নার্সিং ইন্সটিটিউট, একটি ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি ও একটি ম্যাটস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বহু আগেই। নেই কেবল মেডিকেল কলেজ। সরকারের সদিচ্ছা ও একটি মাত্র ঘোষনাই বদলে দিতে পারে ঝিনাইদহের চিত্র।

মঙ্গলবার ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঝিনাইদহ জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় জনপ্রতিনিধিরা ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবীতে সোচ্চার হন। বিষয়টি তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টিতে আনার দাবী জানান।

দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু ইউসুফ মো: রেজাউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রউফ মন্ডল, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দীন আজাদ, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এড আব্দুল আলিম, কালীগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু, কোটাচাঁদপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমা খাতুন, কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আকরামুল হক, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানোয়ার হোসেন মোল্লা, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম, হরিণাকুন্ডুর কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান জোয়ারদার।

সমন্বয় সভায় জনপ্রতিনিধিরা ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপনের যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালটি ইতিমধ্যে আড়াইশ বেডে উন্নীত করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ১৫/১৬ কোটি টাকার টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। কুষ্টিয়া ও যশোরের চেয়ে ঝিনাইদহ জেলা একশ ভাগ সুবিধা জনক স্থানে থাকার পরও এখানে মেডিকেল কলেজ স্থপন না করা দুঃখজনক।

মেডিকেলের ছাত্র ছাত্রীদের অনুশীলন ও পড়ালেখার জন্য বহু আগেই সহায়ক দুইটি নার্সিং ইন্সটিটিউট, একটি ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি ও একটি ম্যাটস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দীন আজাদ বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সংসদে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের উন্নত কর্মকান্ড তুলে ধরে প্রশংসা মুলক বক্তব্য দিয়েছেন। সরকারের একাধিক সচিব হাসপাতাল পরিদর্শন করে এটি বাংলাদেশের মডেল হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

এখন ঝিনাইদহবাসীর প্রণের দাবীতে পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়টি। কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু বলেন, বহু আগে থেকেই ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থপানের বিষয়টি উচ্চারিত হয়ে আসছে।

মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান চর্চার জন্য জন্য সবই ঝিনাইদহে বিদ্যমান। এখন ঘোষনা আর লোকবল দিলেই ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ চালু হতে পারে। সদরের উপজেলা চেয়ারম্যান এড আব্দুল আলীম ও কোটাচাঁদপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমা খাতুন ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থপনের পক্ষে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরে অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবী জানান।

এদিকে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম জানান, ভৌগলিক কারণে ঝিনাইদহ একটি গুরুত্বপুর্ণ জেলা। দক্ষিনাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার হিসেবে ঝিনাইদহ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে যে ভাবে রোগীর চাপ বাড়ছে, তাতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন ছাড়া এই চাপ কমানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, প্রতিদিন আউট ডোরে এক হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিদিন শিশু, গর্ভবতি মহিলা, মারামারি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ প্রায় পাঁচশ রোগী ভর্তি হচ্ছে।

চিকিৎসক ও বেড না থাকায় এতো মানুষ একসঙ্গে চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হলে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ সহজে উন্নত সেবা পেত।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগর প্রধান ডাঃ এমদাদ হোসেন জানান, মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার সহায়ক সব কিছুই এখন ঝিনাইদহে রয়েছে। তবে সরকারের বিবেচনায় ঝিনাইদহকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সচিবরা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালকে উন্নত করতে একটি পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। আশা করা যায় দ্রুতই ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থাপন হবে। তবে প্রশাসনের একটি সুত্র জানায়, ঝিনাইদহের জনপ্রতিনিধিরা সরকারের উপর মহলে যোগাযোগ করলেই কেবল ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবীটি বাস্তব রুপ নিতে পারে।

Tags

Related Articles

Close