জাতীয়বাংলাদেশরাজনীতিলাইফস্টাইলসর্বশেষ নিউজ
যত বাধাই আসুক নিরপেক্ষভাবে দায়িত করে যাবো : এসি ইলিয়াছ
নিউজরুমবিডি.কম: বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে নমিনেশন ফরম জমা দিতে নেতা-কর্মীরা প্রধান সড়কে জড়ো হতে থাকে ১৪ নভেম্বর। বিএনপি নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দুপুরের দিকে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কোন কারণ ছাড়াই কথা কাটাকাটি হয়। পরে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
কিছু দুবৃত্ত পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার এবং সদস্য আহত হন।
আহতদের মধ্যে সহকারী পুলিশ কমিশনার মিশু বিশ্বাস এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি পেট্রোল, মতিঝিল জোন) মো: ইলিয়াছ হোসেন আহত হন।
দুবৃত্তরা সহকারী পুলিশ কমিশনার মিশু বিশ্বাস এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি পেট্রোল, মতিঝিল জোন) এলিয়াস হোসেনের সরকারি গাড়ি দুটো পুড়িয়ে দেয়।
এ ঘঁটনায় পুলিশ বাদি হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় ৩ টি পৃথক মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় ইতোমধ্যে ৬৭ জন বিএনপির নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আরও ৩০ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় ইটের আঘাতে মাথায় এবং পায়ে গুরুতর আঘাত পান মো: ইলিয়াছ হোসেন। তিনি বর্তমানে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে দেখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারি এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া হাসপাতালে যান। এ সময় তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদানের কথা বলেন এবং নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
ইলিয়াছ হোসেন ঢাকামিরর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেদিন আমি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলাম। বিএনপি অফিসের আশে পাশে যাতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলাম। কিন্তু আশাহত হলাম যখন দেখলাম আমার উপর হামলা হচ্ছে এবং আমার ব্যবহার করা গাড়িটি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।“
তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক না কেন আমি সবসময়ই নিরপেক্ষভাবে দায়িত করে যাবো।
এদিকে নির্বাচন বিশ্লেষকরা দাবি করছেন, যখনই জাতীয় নির্বাচন আসে তখন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মূল টার্গেট থাকে পুলিশ কিংবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা মনে করেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই তাদের সব কাজের মূল প্রতিবন্ধক।
জানা যায়, রাজনৈতিক এ সহিংসতায় ২০১৩ সালে ১৫ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন৷ ২০১৪ ও২০১৫ সালে ৩ জন করে ৬ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন৷
সর্বশেষ ২ দিন (১৪ নভেম্বর, বুধবার) আগে নয়াপল্টনের ঘটনায় পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ আহত হন ২৩ জন। এ ঘটনায় পুলিশের ২টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলাসহ আক্রমণ করা হয় পুলিশের সাঁজোয়া যান এপিসিতেও।
ঘটনায় আহত মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার মিশু বিশ্বাস ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমাকে এবং আমার গাড়ী আক্রমণ করে দুষ্কৃতিকারীরা। পিঠে ও পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে সাঁজোয়া যানে আক্রমণ করলে আমি দ্রুত সাঁজোয়া যানে উঠার চেষ্টা করি। তারা আমাকে আবার আক্রমণ করে, পরবর্তীতে আমি সাঁজোয়া যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আত্মরার্থে কয়েক রাউন্ড ফায়ার করে নিরাপদে ফিরে আসি। কিন্তু আমার গাড়ীটি তারা জ্বালিয়ে দেয়।’
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, নয়াপল্টনের ঘটনা ছিলো পূর্বপরিকল্পিত। তারা পুলিশকে টার্গেট করে আক্রমণ চালিয়েছে। যার ফলে আমাদের পুলিশের ৫ জন অফিসারসহ অনেকেই আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, আমরা তাদের শনাক্ত করেছি।