জাতীয়বাংলাদেশরাজনীতিসর্বশেষ নিউজ
দীর্ঘ ছয় বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ মুক্তির, জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ
মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামী সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খাঁন মুক্তির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে অতিরিক্ত প্রথম জেলা ও দায়রা জজের বিচারক মো. সিকান্দর জুলকার নাইন। সহিদুর রহমান খাঁন মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁনের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ছোট ভাই।
এর আগে দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর বুধবার সকালের দিকে হঠাৎ প্রথম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আইনজীবির মাধ্যমে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। এসময় তার সাথে টাঙ্গাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন ও ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তার বড় ভাই আমানুর রহমান খাঁন রানা উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌশলি ( পিপি) মনিরুল ইসলাম খান জানান, সকাল পৌঁনে ১১ টা দিকে সহিদুর রহমান তার বাবা সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান ও ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে সাথে নিয়ে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তারা আদালত কক্ষের ভিতর অবস্থান নিয়ে আত্মসমর্পনের কাগজপত্র জমা দেন। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিকেল তিনটার দিকে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম, আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল বাকী মিয়াসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামক দুইজনকে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গ্রেপ্তার করে। ওই দুই আসামীর জবানবন্দিতে এই হত্যার সাথে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালিন সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা এবং তার অপর তিন ভাই পৌরসভার তৎকালিন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকণ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তার পরেই আমানুর ও সহিদুরসহ চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে আমানুর ২২ মাস পলাতক থাকার পর আদালতে আত্মসর্মপন করেন। প্রায় দুই বছর হাজতে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। তবে তার অপর দুই ভাই এখনো পলাতক রয়েছেন। আদালতে এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।