বিনোদন
গীতিকারদের লজ্জিত হওয়া উচিত…II সোমেশ্বর অলি
গীতিকারদের লজ্জিত হওয়া উচিত…
সমাজে গীতিকারেরা অবহেলার শিকার- এটা সুপ্রতিষ্ঠিত। এই সিস্টেম এতোটাই প্রচলিত যে, সবাই ভাবতে পারেন অর্থ বা পুরস্কার কোনোটাই তার দরকার নেই। জানেন কি সিনেমার একটি গানের অডিও তৈরি ও শুটিংয়ে কতো বেশি টাকা খরচ করা হয়? সেই তুলনায় গীতিকার কতো কম টাকা সম্মানী পান! তা খুবই সামান্য, নামমাত্র, উল্লেখ করার মতো নয়।
অডিও গান তথা মিউজিক ভিডিওর বেলাতেও সবচেয়ে অবহেলিত পাত্রটির নাম গীতিকার। এতো এতো অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়, গীতিকারেরর জন্য কোনো কোটা নেই। অথচ তারই লেখা আট-দশ লাইনের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন সেরা গায়ক, সেরা গায়িকা, সেরা কম্পোজারকে। ভাবা যায়!
গীতিকারদের লজ্জিত হওয়া উচিত।
লজ্জিত হওয়া উচিত এই কারণে যে, নিজে নিজের পারিশ্রমিক বাড়াবেন না, আপনার কলিগ যোগ্যতা/জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে পারিশ্রমিক বেশি নিলে, তারই বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তাকে বয়কট করবেন…
লজ্জিত হওয়া উচিত এই কারণে যে, ফ্রি গান লিখে দেবে এমন সৌখিন, অমেরুদণ্ডী ও মৌসুমী গীতিকারের অভাব নেই। এদের দৌরাত্ম বন্ধ হবে এমন উদ্যোগ নেই।
লজ্জিত হওয়া উচিত এই কারণে যে, গীতিকারদের কোনো ঐক্য নেই, সাংগঠনিক কোনো পরিচয় নেই, নেই পারস্পরিক যোগাযোগ ও শ্রদ্ধাবোধ। ক্রিকেটাররা দাবি আদায়ে মাঠে নামতে পারেন, আপনারা নিজের স্বার্থে ফেসবুকেও টুঁ শব্দ করেন না…
লজ্জিত হওয়া উচিত এই কারণে যে, গীতিকারদের সম্মান নেই এমন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানগুলোতে গিয়েও আপনারা হাসিমুখে সেলফি তোলেন, তেলবাজি জারি রাখেন, সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে নতুন কার জন্য গান লেখা যাবে সেই ধান্দা করেন। সেসব অনুষ্ঠান বয়কট করার চিন্তাও আসেনা আপনার ঊর্বর মস্তিষ্কে।
আপনাদের জয় হোক।
—————–
সোমেশ্বর অলি
গীতিকার
২২ অক্টোবর, ২০১৯। ধানমন্ডি, ঢাকা।
ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত