বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
বি.বাড়িয়ার ফরিদা বেগম পাঁচ মাস পর টাঙ্গাইলে উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিনিধি: ষাটোর্ধ বছর বয়সী ফরিদা বেগম ব্রাক্ষণবাড়িয়ার রামরাইল গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী তোজাম্মেল হক গ্রাম্য ডাক্তার। ফরিদা বেগম দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক রোগে ভুগছিলেন। প্রায় পাঁচ মাস আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে নানা এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছেন। দীর্ঘদিন বাড়ির লোকজন ও আত্মীয়স্বজন খুঁজে বেড়িয়েছেন ফরিদা বেগমকে। কোথাও তাঁকে খুঁজে না পেয়ে এক সময় তাকে পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন প্রায়। অবশেষে ফরিদা বেগমের খোঁজ মিলেছে টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের বানিয়ারছিট গ্রামের আজাহার উদ্দিনের বাড়িতে।
জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার মাগরিবের আযানের সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ফরিদা বেগম আজাহার উদ্দিনের বাড়িতে এসে ঢুকে পড়ে। অজ্ঞাত মহিলাকে দেখে বাড়ির মানুষজন ভয়ে আশপাশের প্রতিবেশিদের ডেকে আনেন। সবাই মিলে বৃদ্ধ মহিলাকে নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে তার বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া বলে জানান। বৃদ্ধা তার স্বামীর নাম তোজাম্মেল ও ছেলের নাম বছির মাস্টার বলে পরিচয় দেন। এ সময় অনেকটা অস্বাভাবিক আচরণ করায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানো হয়। তবে রাতে কোন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বৃদ্ধাকে দেখতে যাননি বলে জানা যায়।
এসময় আজাহার উদ্দিনের চাচাতো ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ভাতিজা আসিফ সিকদার ও আবিদা সুলতানা- বৃদ্ধার দেওয়া ঠিকানা অনুসারে বৃদ্ধার ছবিসহ ফেসবুকের নানা গ্রুপ ও পেইজে যোগাযোগ করেন। এসময় তাদেরকে সহযোগিতা করেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মেহেদী হাসান ও নাহার লিসা।
পরবর্তীতে আজাহার উদ্দিনের ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন উদয় রাতেই কুমিল্লা জেলার এডিশনাল এসপি নাজমুল হাসান রাফী ও সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির উদ্দিনকে বিষয়টি অবহিত করলে থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়। উপপরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেন এবং বৃদ্ধা ঘুমাবস্থায় থাকায় ঐ বাড়িতেই রেখে আসেন।
আজ শুক্রবার সকালে মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধা সবার অজান্তেই ঐ বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পরপরই ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে জানতে পেরে বৃদ্ধার বাড়ির লোকজন আজাহার উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। তখন আজাহার উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন মোটরসাইকেলে করে আশপাশের গ্রামে বৃদ্ধাকে খুঁজে বেড়ান। অবশেষে সখিপুরের কচুয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করে ঐ বৃদ্ধার বাড়ির লোকজনকে ফোন করে জানিয়ে দেন। বৃদ্ধার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তার ভাগ্নি জামাই আব্দুল লতিফ ও নাতি তৌফিকুল ইসলাম রাজু কর্মস্থল গাজীপুরের মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী থেকে ছুটে যান টাঙ্গাইলের সখিপুরের বানিয়ারছিট গ্রামে।
ফরিদা বেগমকে কাছে পেয়ে তার স্বজনরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বৃদ্ধা ফরিদা বেগমও তার স্বজনদের চিনতে পারেন। এসসময় তৌফিকুল ইসলাম রাজু বলেন, আমরা এ বাড়ির সকলের কাছে ও এলাকাবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তাঁদের সহযোগিতায়ই পাঁচ মাস পরে হলেও আমার নানীকে ফিরে পেয়েছি।