বাংলাদেশসর্বশেষ নিউজ
ঝিনাইদহে সিভিল সার্জনের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে আতাঁত করে চলছে ক্লিনিক ব্যবসা
মহেশপুরে চলমান রয়েছে বন্ধ ৩ ক্লিনিক
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ সিজারিয়ান অপারেশনের পর প্রসুতি মৃত্যুর দায়ে বন্ধ মহেশপুরের তিনটি ক্লিনিক চলছেই। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের নির্দেশ অমান্য করে ক্লিনিক মালিকরা আগের মতোই অপারেশনসহ নানা কার্যক্রম অব্যাহত রখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে ক্লিনিক চালু রাখার সত্যতা মিলেছে। ক্লিনিক মালিকরা বলছেন, তারা সিভিল সার্জনের চিঠি পাননি। ফলে অসহায় রোগীদের চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক চালু রাখতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম মঙ্গলবার দুপুরে জানান, প্রসুতি মৃত্যু ও অনিয়মের করণে আমি কালীগঞ্জের দুইটি, মহেশপুরের ৩টি ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার একটিসহ মোট ৬টি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তায় হরিণাকুন্ডু শহরের আসমত আলীর মালিকানাধীন ভাই ভাই ক্লিনিক, মহেশপুরের নেপার মোড়ে অবস্থিত মোহন লালের মালিকানাধীন একতা ক্লিনিক, একই বাজারের নাজমুল হাসান মনুর মালিকানাধীন মা ও শিশু ক্লিনিক, মহেশপুর শহরের সুবাশ চন্দ্র দাসের মহেশপুর প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর যথাক্রমে রোজিনা খাতুন, লাবানী আক্তার, মরিয়ম খাতুন ও রিনা খাতুন নামে তিন প্রসুতির মৃত্যু ঘটে।
মহেশপুরের তিন ক্লিনিকে অপারেশন করেন বাগেরহাট শহরের পিসি কলেজ রোডের বাসিন্দা আকতার হোসেনের ছেলে ডাঃ সোহলে রানা। তিনি এখনো ওই সব ক্লিনিকে গোপনে গোপনে সিজার করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলা শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকটি প্রসুতি মৃত্যুর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে।
সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম আরো জানান, চার প্রসুতি মৃত্যুর পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাছাড়া তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো বন্ধ রাখার জন্য গত ২০ আগষ্ট সিএসঝি/১৬২৫ নাং স্মারকে চিঠি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কথিত চিকিৎসক ডাঃ সোহেল রানাকে তার ডাক্তারী সনদ নিয়ে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তিনি হাজির না হয়ে সত্যায়িত ছাড়াই কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এটাসটেড ব্যতিত কাগজ আমি গ্রহন করিনি। সিভিল সার্জন বলেন, বন্ধ রাখার জন্য চিঠি দেওয়ার পরও যদি ক্লিনিক চলে সেটা আমি খতিয়ে দেখবো।
মহেশপুরের নেপার মোড়ে অবস্থিত একতা ক্লিনিকের মালিক মোহন লাল জানান, সিভিল সার্জন দপ্তরের কোন চিঠি আমি পায়নি। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আনজুমান আরা বেগম ক্লিনিক বন্ধের বিষয়ে কিছুই বলেনি। তাই অসহায় রোগীদের স্বার্থে ক্লিনিক চালু রেখেছি।
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বত শীল জানান, তিন ক্লিনিকে রোগী মারা গেছে এবং এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে এটা আমি জানি। তবে ক্লিনিক তিনটি বন্ধের ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলা হয়নি। চিঠি পেলে আমি ব্যবস্থা গ্রহন করবো। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আনজুমান আরা বেগমের কাছে এ বিষয়ে ফোন করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।